ভোটার তালিকায় মৃত শতবর্ষী লোকমান হোসেনের বয়স্ক ভাতা বন্ধ

ভোটার তালিকায় মৃত দেখানোয় বন্ধ হয়ে গেছে শতবর্ষী লোকমান হোসেনের নামে বরাদ্দ বয়স্ক ভাতা। সম্প্রতি পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখিত জন্ম তারিখ অনুযায়ী লোকমান হোসেন মণ্ডলের বয়স ১০৪ বছর। ছবি: সংগৃহীত

ভোটার তালিকায় মৃত দেখানোয় বন্ধ হয়ে গেছে শতবর্ষী লোকমান হোসেনের নামে বরাদ্দ বয়স্ক ভাতা। সম্প্রতি পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

তবে, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তথ্য সংগ্রহের ভুলে এমনটি হয়েছে বলে দাবি নির্বাচন অফিসের।

তালিকায় মৃত লোকমান হোসেন মণ্ডলের বয়স ১০৪ বছর। জীবিতদের তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য ইতোমধ্যে তিনি আবেদনও করেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসে।

তালিকা সংশোধন হওয়ার পর আবারও তার ভাতা চালু করা যাবে বলে জানিয়েছেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

লোকমান হোসেন জানান, গত মাসে বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে গেলে তিনি জানতে পারেন, তালিকায় তাকে মৃত দেখানোয় ভাতার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

জীবিত থাকতেই কীভাবে মৃত দেখানো হলো? কারা এমনটি করলেন? এর কিছুই জানেন না বয়সের ভাড়ে ন্যুব্জ লোকমান হোসেন।

তবে ভাতা পাচ্ছেন না, সে বিষয়টি জানান তিনি।

লোকমান হোসেন মণ্ডল সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামের মৃত উজির মণ্ডলের ছেলে। তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৮ আগস্ট ১৯১৭ সাল।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভাতা বই থেকে জানা যায়, লোকমান হোসেন মণ্ডল গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে আর বয়ষ্ক ভাতা পাননি। জীবিত থেকেও কাগজে কলমে মৃত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ভাতা।

সুজানগর উপজেলার সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটার তালিকার সার্ভারে লোকমান হোসেন মণ্ডলের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করলে তাকে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এজন্য তার বয়স্ক ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে।’

এর আগে ভাতা দেওয়ার কাজ ম্যানুয়ালি করা হলেও এ বছর থেকে সব কাজ অনলাইনে শুরু হওয়ার পর এই সমস্যা ধরা পড়েছে।

সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম বলেন, ‘গুপিনপুরের লোকমান হোসেন মণ্ডল জীবিত আছেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে কখনো মৃত ঘোষণা করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কীভাবে তাকে মৃত ভেবে ভাতা বন্ধ করেছেন বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সুজানগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহকারীরা নির্বাচন অফিসে ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে।’

ভোটার তালিকায় নাম সংশোধনের জন্য লোকমান হোসেন ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। যথাযথ নিয়মে ভোটার তালিকায় তার নাম সংশোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।

লোকমান হোসেন জানান, মাসে ৫০০ টাকা ভাতা একটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত না হলেও এটি বয়স্কদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সন্মান। তাই তিনি এ সন্মান ফিরে পেতে চান।

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

31m ago