প্রথম আলোর সাংবাদিকের ওপর হামলা: সৈনিক লীগ নেতা জুম্মান গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদাৎ হোসেনের ওপর হামলার ঘটনার ছয়দিন পর জেলা সৈনিক লীগের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জুম্মানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ছাড়াও, এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি রোমান মিয়ার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকি-আল-ফারাবী রিমান্ডের আদেশ দেন বলে দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন শাহাদাৎ’র আইনজীবী মো. নাসির মিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, মামলার অপর আসামি জহিরুল ইসলাম জুম্মানকে আজ দুপুরে শহরের কাজীপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার বাদী শাহাদাৎ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রধান আসামি রোমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। অপরদিকে রোমানের পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। এরপর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকি-আল-ফারাবী জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন পুনরায় চালুর দাবিতে গত ১ জুন বেলা ১১টার দিকে স্টেশন চত্বরে সচেতন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহে স্টেশন চত্বরে যান শাহাদাৎ। মানববন্ধনের শেষপর্যায়ে শাহাদাৎ জানতে পারেন ছাত্রলীগের এক কর্মী রেলস্টেশনের গেটকিপার মুরাদুল ইসলামকে মারধর করেছেন। তিনি বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাসান সারওয়ারকে অবহিত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ কর্মী রোমান ঘটনাস্থলে হাসান সারোয়ারের সামনেই শাহাদাৎকে আকস্মিক কিল-ঘুষি মারেন। সেসময় হাসান সারোয়ার নির্বিকার দাঁড়িয়ে ছিলেন। এতে শাহাদাৎ’র নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক শাহাদাৎকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
শাহাদাতের ওপর হামলার খবরে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে জড়ো হন এবং রোমানকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
ওইদিন সন্ধ্যায় শাহাদাৎ হোসেন বাদী হয়ে রোমান মিয়া ও তার বড় ভাই জুম্মানের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। একইদিন ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় শহরের বিরাসার এলাকা থেকে পুলিশ রোমানকে আটক করে এবং মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
আরও পড়ুন:
Comments