দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও কলম্বিয়ার সঙ্গে আর্জেন্টিনার ড্র

কলম্বিয়ার মাঠে ২-২ গোলে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা।
argentina vs colombia
ছবি: টুইটার

উজ্জীবিত ফুটবলে শুরুতেই প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দিল আর্জেন্টিনা। ম্যাচের আট মিনিটের মধ্যে তারা এগিয়ে গেল দুই গোলের ব্যবধানে। তবে হাল ছেড়ে না দিয়ে লড়াই অব্যাহত রাখল কলম্বিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের গোলে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের রুখে দিল তারা।

বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে এল মেত্রোতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে কলম্বিয়ার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। তাদের পক্ষে প্রথমার্ধে জালের দেখা পান ক্রিস্তিয়ান রোমেরো ও লেয়ান্দ্রো পারেদেস। বিরতির পরপর লুইস মুরিয়েল ব্যবধান কমান। আর শেষ মুহূর্তে সমতা টেনে আর্জেন্টিনাকে জয়বঞ্চিত করেন মিগেল বোরহা।

জমজমাট লড়াইয়ে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও প্রাধান্য দেখায় আর্জেন্টিনা। তাদের ১৫ শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল আটটি। বিপরীতে, কলম্বিয়ার ১২ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। শারীরিক শক্তি প্রদর্শনের প্রবণতাও দেখা যায় ম্যাচে। কলম্বিয়ার পাঁচ ও আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়কে দেখানো হয় হলুদ কার্ড।

একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন আনা আর্জেন্টিনা লিড পায় তৃতীয় মিনিটেই। মিডফিল্ডার রদ্রিগো দে পলের ফ্রি-কিকে জোরালো হেডে লক্ষ্যভেদ করেন রোমেরো। চিলির বিপক্ষে আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া এই ডিফেন্ডারের জাতীয় দলের জার্সিতে এটি প্রথম গোল।

চার মিনিট পর লিওনেল মেসির পাসে মার্কোস আকুনিয়ার শট কলম্বিয়ার ইয়েরি মিনার গায়ে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এতে পাওয়া কর্নার থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আলবিসেলেস্তেরা। সতীর্থের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন পারেদেস। এরপর পায়ের কারিকুরিতে প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠান তিনি।

দুই গোল হজমের পর গুছিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা দেখা যায় কলম্বিয়ার। আক্রমণে উঠে টানা কয়েকটি কর্নার আদায় করে নেয় তারা। তাদের পক্ষে প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করেন ডিফেন্ডার উইলিয়াম তেসিয়ো। ১৩তম মিনিটে হুয়ান কুয়াদ্রাদোর কর্নারে তার হেড লক্ষ্যে থাকলেও আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক মার্তিনেজকে পরাস্ত করতে পারেনি।

২৭তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত সফরকারীরা। জিওভান্নি লো সেলসসোর থ্রু বল ধরে ইন্টার মিলানের ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেজ নেন কোণাকুণি শট। তা ফিরিয়ে দিলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি কলম্বিয়ান গোলরক্ষক দাভিদ ওসপিনা। ফিরতি বলে আকুনিয়ার শট বাইরের দিকের জালে লাগে।

paredes
ছবি: টুইটার

৩৬তম মিনিটে বল লুফে নিতে গিয়ে এভারটনের ডিফেন্ডার মিনার ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান মার্তিনেজ। অনেকক্ষণ মাঠেই সেবা-শুশ্রূষা করার পর তাকে স্ট্রেচারে করে বাইরে নেওয়া হয়। অ্যাস্টন ভিলার এই গোলরক্ষকের জায়গায় নামানো হয় অগাস্তিন মার্চেসিনকে। আসন্ন কোপা আমেরিকার আগে মার্তিনেজের এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে আর্জেন্টিনার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ।

৪৩তম মিনিটে বার্সেলোনা তারকা মেসির ফ্রি-কিক রুখে দেন ওসপিনা। মার্তিনেজের চোটের কারণে প্রথমার্ধে যোগ করা হয় বাড়তি আট মিনিট। বিরতির কিছু আগে গোল শোধের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া হয় কলম্বিয়ার। বদলি মুরিয়েলের পাসে ডি-বক্সের ভেতর থেকে বল উড়িয়ে মারেন দুভান জাপাতা।

দ্বিতীয়ার্ধে তিনটি বদল নিয়ে নেমে আক্রমণে ধার বাড়ায় কলম্বিয়া। ফল পেতে বেশি সময় লাগেনি তাদের। ৫১তম মিনিটে আতালান্তার স্ট্রাইকার মুরিয়েলের সফল স্পট-কিকে ব্যবধান কমায় তারা। ডি-বক্সে মাতিয়াস উরিবেকে নিকোলাস ওতামেন্দি ফাউল করায় রেফারি বাজিয়েছিলেন পেনাল্টির বাঁশি।

ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পরিস্থিতিতে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। ৫৮তম মিনিটে মেসির আরেকটি ফ্রি-কিক অসাধারণ দৃঢ়তায় রক্ষা করেন ওসপিনা। সাত মিনিট পর আবারও দলকে বাঁচাতে হয় তার। রেকর্ড ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসির রক্ষণচেরা পাসে লাউতারোর শট পা দিয়ে ঠেকান তিনি।

৭১তম মিনিটে মুরিয়েলের শট লক্ষ্যে থাকেনি। ৮৫তম মিনিটে বাঁ পায়ের শটে ওসপিনাকে ফের ফাঁকি দিতে ব্যর্থ হন ৩৩ বছর বয়সী মেসি। গত ম্যাচেও তার সামনে একই কায়দায় চীনের প্রাচীর হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন চিলির গোলরক্ষক ক্লদিও ব্রাভো।

ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগে কলম্বিয়াকে উল্লাসে মাতান বদলি স্ট্রাইকার বোরহা। গোটা ম্যাচে দারুণ খেলা কুয়াদ্রাদোর ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন তিনি। এতে অবশ্য দায় আছে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষকের। বলে হাত লাগালেও গোললাইনের বাইরে রাখতে পারেননি মার্চেসিন।

বাছাইয়ের ৬ ম্যাচে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার এটি টানা দ্বিতীয় ও সবমিলিয়ে তৃতীয় ড্র। ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে তালিকার দুইয়ে। ৫ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান ব্রাজিলের। পাঁচে থাকা কলম্বিয়ার পয়েন্ট ৬ ম্যাচে ৮।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago