হাতিয়ায় ইউপি সদস্যকে হত্যার ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ ৪৪ জনের নামে মামলা
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবীন্দ্র চন্দ্র দাসকে (৪৮) হত্যার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে নিহতের ছেলে বিকেল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আশরাফুল হক সোহেলকে এবং ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদকে।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ও শুক্রবার ভোরে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই দু’জন হলেন- গামছাখালির আজাদ (৩৪) ও সুমন দাস (৪০)। তারা মামলার ২৮ ও ২৩ নং আসামি।
আজ বিকেলে চারটার দিকে হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে নিহত রবীন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে বিকেল চন্দ্র দাস ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ লিখিত অভিযোগটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে। মামলার ২৮ ও ২৩ নং আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার আজাদ ও সুমন দাসকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।’
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ওসি। তবে, এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এই মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল হক সোহেল পলাতক থাকায় তারা মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এই মামলার অভিযুক্ত আসামি চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি একজন শক্তিশালী প্রার্থী। আমি যেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারি সেজন্য একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। রবীন্দ্র হত্যাকাণ্ডের আগেই আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চার্জ বুঝিয়ে দিয়ে ঢাকা যাই। এই মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল হক সোহেল আমার আপন ভাতিজা। তিনিও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমি ও আমার ভাতিজা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারি সেজন্য পরিকল্পিতভাবেই এ খুনের ঘটনা ও মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
তিনি এ হত্যাকাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘রবীন্দ্র হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমি ও আমার ভাতিজা কিংবা আমাদের পরিবারের কেউ জড়িত নয়।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের বাংলাবাজার থেকে মোটরসাইকেল যোগে বরীন্দ্র চন্দ্র দাসসহ সাতজন হাতিয়া পৌরসভার ওছখালি মহল্লার বাসায় আসছিলেন। পথে খাসের হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর গুলি হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন রবীন্দ্র। পরে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে টহল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু সময় পর তিনি মারা যান।
Comments