কৃত্রিম কীটনাশক নিষিদ্ধে সুইজারল্যান্ডে গণভোট

সুইজারল্যান্ডের নাগরিকরা একটি গণভোটে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে সে দেশে কীটনাশকের ব্যবহারের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।
ছবি: সংগৃহীত

সুইজারল্যান্ডের নাগরিকরা একটি গণভোটে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে সে দেশে কীটনাশকের ব্যবহারের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।

এই গণভোটের পর সুইজারল্যান্ড হতে পারে বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ, যেখানে কৃত্রিম কীটনাশকের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ হবে।

যেসব কৃষক এ ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করেন, তাদেরকে ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ভিন্ন একটি প্রস্তাবে পর্যায়ক্রমে ১০ বছর ধরে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়।

নিষিদ্ধ করার স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে পানিতে উদ্বেগজনক হারে কীটনাশকের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের ওপর এর খারাপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে সুইস কৃষকরা সতর্ক করেছেন যে এ ধরণের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে তাদের অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে যেতে পারেন।

বিবিসি জানিয়েছে, আজ রোববার অন্যান্য বিষয়ের ওপরেও দেশটিতে ভোট গ্রহণ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি দমন আইন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ওপর বাড়তি কর এবং জরুরি কোভিড-১৯ তহবিল।

গণতান্ত্রিক দেশ সুইজারল্যান্ডে যেকোনো বিষয়ের ওপর দেশব্যাপী গণভোটের আয়োজন করার জন্য মাত্র এক লাখ মানুষের সমর্থনসূচক সই প্রয়োজন হয়।

যদি কীটনাশক নিষেধাজ্ঞাটি গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদন পায়, তাহলে তা বেশ বড় ধরণের বৈশ্বিক প্রভাব ফেলবে।

২০১৩ সালে ভুটানে কীটনাশক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও এর প্রভাব বিশ্বে তেমন একটি পড়েনি।

তবে সুইজারল্যান্ডের পরিস্থিতি বেশ ভিন্ন। কারণ এই দেশেই রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কীটনাশক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিনজেনটার প্রধান কার্যালয়।

শহরে বসবাসকারী তরুণ ভোটারদের কাছে কীটনাশক ব্যবহারকারী কৃষকদের ভর্তুকি প্রত্যাহার ও কীটনাশক ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দুটিই ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

তবে সুইস কৃষকরা বলছেন, তারা ইতোমধ্যেই পুরো ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর নীতিমালা মেনে চলছেন। গত ২০ বছরে তাদের আয় ও কর্মসংস্থান অনেকাংশেই কমে গেছে। এই প্রস্তাবে তারা বেশ উত্তেজিত অবস্থায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

জুরিখ কৃষক সংগঠনের সভাপতি মার্টিন হাব হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনি এমন অনেক মানুষ পাবেন, বিশেষ করে শহরে, যাদের কৃষিকাজ সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই।’

‘তারা তাদের জানালার সামনের বাগানে দুটি টমেটো ফলিয়ে নিজেদেরকে অনেক বড় কৃষি বিশেষজ্ঞ মনে করছে। তারা ভাবছেন, তারা অর্গানিক কৃষিকাজের ব্যাপারেও সব জেনে ফেলেছেন,’ বলেন মার্টিন।

সুইজারল্যান্ডের কৃষিকাজের সমর্থক গোষ্ঠী বেশ ক্ষমতাবান এবং সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে তারাই সম্ভবত সংখ্যাগরিষ্ঠ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোটাররা নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করলেও কীটনাশক ব্যবহারের বিতর্কটি খুব সহজে দূর হবে না।

সবাই একটি ব্যাপারে একমত, দেশের জলবায়ুকে সুরক্ষিত করার জন্য যা করা দরকার, তা করতেই হবে।

তবে এক্ষেত্রে কী করতে হবে, সে ব্যাপারে ঐক্যমতে পোঁছাতে পারছেন না দেশটির নাগরিকরা। আর এজন্যই এই গণভোটের আয়োজন।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago