১৯ জুন থেকে আবার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শুরু

ফাইল ফটো

আগামী ১৯ জুন থেকে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকাদান আবার শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে মায়ের মৃত্যু উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। টিকার স্বল্পতার কারণে প্রায় দুই মাস আগে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধ হয়।

গতকাল রোববার এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন যে প্রথম ডোজ হিসেবে চীনের সিনোফার্ম ও ফাইজার, এই দুই টিকাই দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উপহার হিসেবে চীন থেকে ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা এবং কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পেয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এর মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন, তারা সবাই টিকা পাবেন। ইতোমধ্যে প্রথম ডোজ হিসেবে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হয়েছে।’

রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, চলতি সপ্তাহে টিকা দেওয়া শুরু না করতে পারলেও, আগামী সপ্তাহে তা শুরু হবে।

জাহিদ মালেক আরও জানান, প্রথম ডোজ হিসেবে সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজের পুরোটাই ব্যবহার করা হবে না।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে এরকম করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আবার একই ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে চাই না। এ দফায় প্রথম ডোজ হিসেবে আমরা পাঁচ লাখ টিকা দেবো। বাকিটা দ্বিতীয় ডোজের জন্য রাখা হবে।’

সিনোফার্মের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে প্রথম ডোজের তিন সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়।

গত ১২ মে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাঁচ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বুঝে পেয়েছে।

এর মধ্যে, উপহারের এই টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দেওয়া শুরু করেছে সরকার।

গতকাল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি উড়োজাহাজ চীন থেকে আরও ছয় লাখ ডোজ সিনোফার্মার টিকা নিয়ে এসেছে।

এর আগে, গত ৩১ মে বাংলাদেশে এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পৌঁছায়। এই টিকা খুব কম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। ঢাকার বাইরে এ সুবিধা পাওয়া সম্ভব না। তাই এগুলো ঢাকার চারটি টিকাকেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ২৭ মে ফাইজারের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

১৮ বছরের ওপরের সবাইকে পর্যায়ক্রমে করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্য সামনে রেখে সরকার গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে।

কিন্তু, টিকার স্বল্পতার কারণে ২৬ এপ্রিল সরকার প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর সপ্তাহখানেক পর একই কারণে সারাদেশের সবগুলো কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহে ব্যর্থ হলে, বালাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে প্রভাব পড়ে।

চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম থেকে ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল।

জানুয়ারিতে সেরাম প্রথম দফায় ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করে। যার মধ্যে ওই মাসে মাত্র ২০ লাখ ডোজের একটি চালান ঢাকায় পৌঁছায়। এরপর সেরাম থেকে বাংলাদেশে আর কোনো চালান আসেনি।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

আরও পড়ুন:

আগামীকাল থেকে বন্ধ করোনার প্রথম ডোজের টিকাদান

থেমে যেতে পারে টিকাদান কর্মসূচি

পাবনায় টিকা কার্যক্রম বন্ধ, দ্বিতীয় ডোজ বঞ্চিত ৩৫ হাজার

পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে: প্রধানমন্ত্রী

জুন-জুলাইয়ের আগে ভ্যাকসিন রপ্তানি অনিশ্চিত: সেরামের সিইও

চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার: ভ্যাকসিন সংকটের মধ্যেও চলবে প্রথম ধাপের টিকাদান

বাংলাদেশকে আরও ৬ লাখ ডোজ করোনা টিকা উপহার দেবে চীন

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা আগে টিকা পাবেন

Comments