ত্ব-হার সন্ধান চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্ত্রী সাবিকুন্নাহারের আবেদন

আবু ত্ব-হার খোঁজ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আকুতি জানিয়েছেন ত্ব-হার দিশেহারা স্ত্রী সাবিকুন্নাহার।
নিখোঁজ আবু ত্ব-হার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ছবি: শাহীন মোল্লা

আবু ত্ব-হার খোঁজ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আকুতি জানিয়েছেন ত্ব-হার দিশেহারা স্ত্রী সাবিকুন্নাহার।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আকুতি জানান।

সাবিকুন্নাহার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখন আমার কাছে দিন-রাত সব সমান। তাই আজ বলতে পারবো না, আজ কত তারিখ বা আজ কী বার। মনে হয়, গতকালের আগের দিন রাতে আমি পল্লবী থানায় গিয়ে উনার (ত্ব-হার) একটা পার্সনাল (ব্যক্তিগত) নাম্বার আছে, আমি সেটা শেয়ার করি। সবাই যেটা জানে দিয়েছিলাম, ব্যক্তিগতটা ভুলে গিয়েছিলাম। সেটা দেওয়ার পর, ওইটা দেখে... ওইটার লোকেশনের কথা বলেনি... গত পরশু রাতে তাৎক্ষণিক তারা একটা অভিযোগ নেয়। এরই মধ্যে রংপুর কোতোয়ালী থানায় উনার মায়ের পক্ষ থেকে একটা জিডি নেয়। সেই জিডির নাম্বার দিয়েই একটা অভিযোগ গ্রহণ করে পল্লবী থানা।’

তিনি তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘এরই মধ্যে আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুবার গিয়েছি। ওখানে আবেদন করেছি। ডিবি কার্যালয়েও অনেকবার ট্রাই করেছি। আমাকে তো কোনোভাবেই প্রবেশ করতে দেয়নি। আমি তো জানিও না কোনভাবে সেখানে যেতে হবে, কীভাবে কি করতে হবে। শুধু উনার জীবনটার কতা ভেবে, উনার জন্য, আমার যন্ত্রণার জায়গা, আমার আর্তনাদের জায়গা থেকে আমাকে আপনাদের সামনে আসতে হয়েছে। আমি কখনো আপনাদের সামনে আসতে চাইনি।‘

সাবিকুন্নাহার জানান, বগুড়ায় একটা প্রোগামের কথা বলে বাসা থেকে বের হলেও সেই প্রোগ্রামটি হয়নি।

এ বিষেয়ে তিনি বলেন, ‘বগুড়ার প্রোগামটা হয়নি। আমার সঙ্গে তার ডিটেইলস কথা হওয়ার সুযোগ ছিল না। আমি মনে করেছিলাম বাসায় আসলে তাকে জিজ্ঞেস করব, কী কারণ ছিল। সে পথের মধ্যে আমার ওপর খুব রেগে গিলেছিল, সে কারণে আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি। শুধু এতটুকু জানতে পেরেছি যে, তিনি ওই দিনের প্রোগ্রামে অ্যাটেন্ড করেননি।’

প্রোগ্রামের আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রোগামে যাননি। যারা আয়োজক আমি তাদের চিনি না। তার কোথায়, কখন প্রোগাম হয় তার সব তো আমি জানি না, যেগুলোর পোস্টার হয় সেগুলো আমি জানি।’

কারা তাকে অপহরণ করতে পারে বলে আপনি সন্দেহ করছেন, অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে গেছে, নাকি অন্য কারও সঙ্গে তার শত্রুতার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে আপনি মনে করেন?

এই প্রশ্নের জবাবে সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘আমি এত কিছু বুঝি না। আমার নানা রকম সন্দেহের জায়গা থাকা স্বাভাবিক। মনে সন্দেহের দানা বাঁধতেই পারে এটা হতে পারে, ওটা হতে পারে। সেই জায়গা থেকে মনে হয় উনার ব্যাপারে অনেক সময় অনেকে বিরূপ মন্তব্য করতেন। অনেক জন অনেক কথা বলতেন। আবার মনে এসব কারণে উনার ওপরের কোনো প্রেসার এলো কি না, মনে হয় এগুলোর জন্য এসব ঘটনায় শিকার হল কি না।

‘উনি জিওপলিটিক্স (ভূ-রাজনীতি) নিয়ে আলোচনা করতো। উনি বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করতো। এ কারণে মনে হয় এটা ইন্টারন্যাশনাল কোনো বিষয় কি না। একেক সময় একেক ধরনের চিন্তা হতেই পারে। আমি এত কিছু বুঝি না আমি জাস্ট ঘটনার স্বাক্ষী। আমি তার সন্ধান চেয়ে আবেদন করছি।’

জিওপলিটিক্সের বিষয়ে ত্ব-হার অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনার (ত্ব-হার) ব্ক্তব্যগুলোতে তো সব আছেই। উনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বলতেন। আমরা মুসলিম সকলেই আল আকসাকে ভালোবাসি। আল কাকসার ওপরে যাদেরই রক্তচক্ষু থাকবে তাদের দ্বারা নির্যাতিতদের প্রতি আমাদের দিল থেকে একটা বেদনা থাকবেই।’

Comments