টিকা সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: চীনা রাষ্ট্রদূত
করোনা প্রতিরোধে বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে টিকা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
তিনি বলেছেন, বিপদে বন্ধুর পরিচয়। চীনের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা চেষ্টা করছেন তারা।
আজ বুধবার হাইব্রিড ধানের জনক অধ্যাপক ইউয়ান লংপিং স্মরণে বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশন (বিএসএ) আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিড এসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হাইব্রিড জাতের ধানের উদ্ভাবক হিসেবে সারাবিশ্বে স্বীকৃতি পাওয়া এই বিজ্ঞানী দারিদ্র বিমোচনসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। ৯১ বছর বয়সে গত ২২ মে চীনের হুনান প্রদেশের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ইতোমধ্যে দুই দফায় ১১ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। ১৩ জুন সর্বশেষ ৬ লাখ টিকা ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে করোনা প্রতিরোধে চীনের এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। শুধু করোনা প্রতিরোধ নয়, যেকোনো প্রয়োজনে চীন সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
বিএসএ সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম সিড কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাসুম, বিএসএ সাধারণ সম্পাদক এফ আর মালিক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও এসিআই এগ্রিবিজনেস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ড. এফ এইচ আনসারী, আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, সাবেক কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, লালতীর সিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব আনাম এবং বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাইদ শাহীন প্রমুখ।
এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. হামনাথ ভাণ্ডারী, ইরির প্রধান কার্যালয়ের হাইব্রিড বিভাগের প্রধান ড. জহুর আলী, চীনের সিড এসোসিয়েশনের সভাপতি ইয়াংকুই জ্যাং, চীনের সিচুয়ান সিড এসোসিয়েশনের পরিচালক শেং লি, চীনের অন্যতম বীজ কোম্পানি হেইজি গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়াও চাও জিয়া, চীনের এয়ার ফার্মার জেনারেল ম্যানেজার জিয়াও ল্যাংমু, বিএসএ সহ-সভাপতি ড. আলী আফজাল এবং নির্বাহী পরিচালক ফখরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
লি জিমিং বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে সুরক্ষা সরঞ্জামসহ বাংলাদেশকে নানা ধরনের চিকিৎসা সহযোগিতা করেছে চীন। তার দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। ভবিষ্যতেও সবধরনের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘চীন ও বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তায় ইউয়ান লংপিংয়ের অবদান অবিস্মরণীয়। ১৯৫০ সালে চীনে মাত্র সাত মিলিয়ন টন চাল উৎপাদন হতো। হাইব্রিড জাত উদ্ভাবনের পর পাঁচ দশকের ব্যবধানে সেটি পাঁচ গুণ বেড়েছে। চীনের অর্ধেকের বেশি জমি এখন হাইব্রিড ধানের আবাদ হচ্ছে। মোট চাল উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশই হাইব্রিড। চীনে এখন ৮০ লাখ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের আবাদ হচ্ছে। বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচনে লংপিংয়ের অবদান অবিস্মরণীয়।’
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘ক্ষুধা নিবারণ, দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুদ্র কৃষকদের আয় বাড়ানো এবং খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করেছেন লংপিং। সারাবিশ্বের অর্ধৈক মানুষ প্রধান খাবার হিসেবে চালের ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে আফ্রিকা ও এশিয়ার দরিদ্র দেশে। খাদ্য নিরাপত্তায় তার এ অবদানের জন্য বিশ্ব তাকে চিরজীবন স্মরণ রাখবে।’
Comments