চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘আমের ১০০ জাত’ বই প্রকাশ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘আমের ১০০ জাত’ নামক একটি বই প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের ঐতিহ্য বজায় রাখতে আম চাষের পাশাপাশি আমের তথ্যাদি সংরক্ষণের জন্য এই বই প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এ উপলক্ষে শনিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, আমকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অর্থনীতি পরিচালিত হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আম চাষ এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িত। মতভেদে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৫০ থেকে ৮৫০ প্রজাতির আমের জাত রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে চার থেকে পাঁচটি আমের জাত ছাড়া বাকি জাতগুলো সেভাবে সম্প্রসারিত হয়নি।
যদিও আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ, তবুও সাম্প্রতিক সময়ে আবহাওয়াজনিত কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আম চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা নওগাঁ এবং দক্ষিণের জেলা চুয়াডাঙ্গা ও সাতক্ষীরায় আম চাষ ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। যার ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের ঐতিহ্যকে বজায় রাখার জন্য আম চাষের পাশাপাশি আমের তথ্যাদি সংরক্ষণ করা অতীব জরুরি বলে জানান তিনি।
এ কে এম তাজকির-উজ-জামান বলেন, ‘ইতোমধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম জিআই সনদ পেয়েছে। এর পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন আম নিয়ে নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। এইসব কর্মকাণ্ডকে একত্রিত করে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের মধ্যে প্রচলিত আমের ১০০টি জাত নিয়ে “আমের ১০০ জাত” নামক বইটি প্রকাশিত হয়েছে।’
তিনি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিবগঞ্জ পৌরসভা এলজিএসপি-৩ প্রকল্প থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বইটি প্রকাশে অর্থায়ন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা জানান, ১০০টি আমের জাত সম্পর্কে এই বইটিতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি আমের জাত নিয়ে বইটির আলাদা পৃষ্ঠায় গাছের ছবি, আমের বিভিন্ন অংশের ছবি, ফলের তথ্য, বীজের তথ্য, খোসা, সংগ্রহ ও সংরক্ষণকাল, ফল ধারণ ও উৎপাদনশীলতা, ব্যবহার, চাষযোগ্য এলাকা ইত্যাদি তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
বইটিতে প্রচলিত জাত ছাড়াও অপ্রচলিত জাতের আমের বিস্তারিত তথ্য স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন আমের জাত নিয়ে প্রকাশিত ‘আমের ১০০ জাত’ বইটি বাংলাদেশে আম নিয়ে প্রকাশিত প্রথম বই। আম চাষিদের পাশাপাশি আমের অনুরাগী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের ভৌগলিক অবস্থান এবং সর্বোপরি আমের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, বিশ্বের বুকে আমগুলোকে নিজেদের হিসেবে অর্থাৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম হিসেবে দাবি করার জন্য এ ধরণের দলিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বইটি প্রকাশের মাধ্যমে সে সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ১০০ আমের জাত নিয়ে বই প্রকাশ করার আগ্রহ জেলা প্রশাসনের আছে বলেও জানান তিনি।
এ কে এম তাজকির-উজ-জামান বলেন, ‘দেশে এ জাতীয় অ্যালবাম এটিই প্রথম। আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট।’
এসময় জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Comments