‘বাবা হলো বটবৃক্ষ’
খুব ছোট্ট একটি শব্দ ‘বাবা’। কিন্তু, বাবা শব্দটির গভীরতা অনেক। বাবা মানেই মাথার ওপর একটি বটবৃক্ষ। বাবা মানে নির্ভরতা। তাই বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক হয়ে থাকে অত্যন্ত আন্তরিক এবং হৃদ্যতার।
শোবিজ অঙ্গনেও রয়েছে অনেক বিখ্যাত বাবা। সেসব বাবাদের কেউ বেঁচে আছেন, আবার কেউ পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিয়েছেন। শোবিজ জগতের বিখ্যাত তারকা বাবাদের অনেক সন্তান বাবার মতো বিখ্যাত হওয়ার পথে হেঁটে চলেছেন। কেউ কেউ সফলও হয়েছেন। আজ ২০ জুন বিশ্ব বাবা দিবস জেনে নিন তারকা বাবা ও তারকা সন্তানদের কথা।
গোলাম মুস্তাফা ও সুবর্ণা মুস্তাফা: গোলাম মুস্তাফার মতো শিল্পী এদেশে কমই এসেছেন। সবরকম চরিত্রে অভিনয় করার ক্ষমতা ছিল তার। নায়ক, খলনায়কসহ নানারকম চরিত্রের দাপুটে অভিনেতা ছিলেন তিনি। সাদাকালো যুগের সিনেমাকে সমৃদ্ধ করতে তিনি অবদান রেখেছিলেন। অন্যদিকে আবৃত্তি শিল্পী হিসেবেও ছিলেন শ্রেষ্ঠদের একজন। তার অভিনীত- রাজধানীর বুকে , রূপালী সৈকতে, ধীরে বহে মেঘনা, শ্রাবণ মেঘের দিন, প্রীত না জানে রীতসহ অসংখ্য সিনেমা কালজয়ী সিনেমা হিসেবে আজও দর্শকদের মনে দাগ কেটে যায়।
তারকা বাবার তারকা সন্তান সুবর্ণা মুস্তাফা। যোগ্য বাবার যোগ্য উওরাধিকারের তালিকা করলে গোলাম মুস্তাফা ও তার কন্যা সাড়া জাগানো অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার নামটি চলে আসে প্রথমেই। বাবার মতোই অভিনয় শিল্পকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা। টেলিভিশন নাটকে সুবর্ণা মুস্তাফার অভিনয় মুগ্ধ করেছে কোটি দর্শকদের। অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকের অভিনেত্রী তিনি। বাবার সঙ্গেও অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।
রাজ্জাক ও বাপ্পারাজ: নায়ক রাজ রাজ্জাক এদেশের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে একটি জনপ্রিয় নাম। কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসার প্রিয় নাম রাজ্জাক। টানা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ঢাকাই সিনেমায় রাজত্ব করে গেছেন। অভিনয়, পরিচালনা, প্রযোজনা সবখানে তিনি সফল ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা সংসার জীবনেও তিনি সফল ছিলেন। সর্বোপরি একজন সফল বাবা ছিলেন তিনি। সংসার জীবনে সুখী মানুষদের তালিকায় (শোবিজ তারকাদের মধ্যে) তার নামটি উঠে আসত অনায়াসে। তাই তো তিনি সন্তানদের ও স্ত্রীকে নিয়ে করতে পেরেছিলেন লক্ষীকুঞ্জ।
নায়ক বাবাকে ছাড়িয়ে যেতে না পারলেও অভিনয় দিয়ে বেশ সাফল্য কুড়িয়েছেন রাজ্জাক পুত্র বাপ্পারাজ। বাবার হাত ধরেই এসেছিলেন সিনেমায়। তারপর বাপ্পারাজ এক এক করে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেন। বাবার সঙ্গে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বাবার পরিচালনায় প্রথম অভিনীত সিনেমার নাম- চাঁপাডাঙার বউ। বাবা দিবসে বাপ্পারাজ বলেন, ‘বাবা হলো বটবৃক্ষ। বাবাকে সব সময়ই মিস করি। বাবাকে সব সময়ই মনে পড়ে। ভীষণ মনে পড়ে বাবাকে। বাবার জন্যই আমি।’
আলমগীর ও আঁখি আলমগীর: নায়ক আলমগীর এদেশের সফল নায়কদের মধ্যে অন্যতম একজন। অভিনয় জীবনে প্রচুর সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে সামাজিক ঘরানার সিনেমায় ব্যাপকভাবে সফলতা অর্জন করেন তিনি। শাবানার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ১৩০টির মতো সিনেমায়। নায়ক থেকে পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবেও নাম লেখান। সেখানেও তিনি সফলতা ধরে রাখতে সক্ষম হন।
সফল বাবার সফল কন্যাও আছে। সফল কন্যাটির নাম আঁখি আলমগীর। যিনি গায়িকা হিসেবে বহু আগেই মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। শুধু কি তাই? শিশু শিল্পী হিসেবে সিনেমায় অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও ঘরে তুলেছেন আঁখি আলমগীর। প্লেব্যাক, স্টেজ শোসহ গানের নানা মাধ্যমেই ব্যস্ততা তার। বাবাকে নিয়ে গর্ব করেন খুব। আঁখি বলেন, ‘সব সন্তানের কাছেই বাবা অনেক গর্বর। আমার বাবাকে নিয়েও আমি গর্ব করি।’
ফেরদৌস ওয়াহিদ ও হাবিব ওয়াহিদ: এদেশে যারা পপ গানকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন-ফেরদৌস ওয়াহিদ তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। গান গেয়ে নিজস্ব ধারা তৈরি করেছেন তিনি। কয়েক দশক টানা গান করেছেন এই গায়ক। অনেক জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। ফেরদৌস ওয়াহিদ একটা সময়কে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ফেরদৌস ওয়াহিদের যোগ্য উওরসূরী হাবিব ওয়াহিদ। এদেশে সংগীতে নতুন ট্রেন্ড তৈরি করেছেন হাবিব। তরুণ প্রজন্ম তার গানকে অসম্ভব পছন্দ করে। আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা তার। কেউ কেউ বলেন, জনপ্রিয়তায় বাবাকে ছাড়িয়ে গেছেন হাবিব। গায়ক ও সুরকার দুটিতেই সফল হাবিব। বিখ্যাত বাবার নাম তিনি রাখতে পেরেছেন। হাবিব বলেন, ‘বাবা আমার খুব ভালো একজন বন্ধু। বাবা দিবসে বাবার জন্য ভালোবাসা।’
Comments