জেমিসনের ৫ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের দিন
ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন কন্ডিশনে কাইল জেমিসন হয়ে উঠলেন ঝাঁজালো। তার উত্তাপের সঙ্গে তাল দিলেন ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, নেইল ওয়েগনাররা। ভারতকে আড়াইশোর অনেক আগেই গুটিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে ভালোই জবাব দিচ্ছে কেইন উইলিয়ামসনের দল।
সাউদাম্পটনে রোববার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তৃতীয় দিন শেষে হাতে ৮ উইকেট নিয়ে ১১৬ রানে পিছিয়ে আছে কিউইরা। ভারত ২১৭ রানে অলআউট হওয়ার পর ২ উইকেটে ১০১ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। ভারতের জন্য আশার খবর দারুণ ব্যাট করতে থাকা ডেভন কনওয়েকে দিনের শেষদিকে ইশান্ত শর্মার শিকার হয়েছেন।
কোন রান না করা রস টেইলরকে নিয়ে অপরাজিত আছেন ১২ রান করা উইলিয়ামসন। এর আগে ৩১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে চালকের আসনে রাখেন জেমিসন। পরে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যান কনওয়ে।
প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর এই টেস্টের ৬ষ্ঠ দিনকে রিজার্ভ ডে করা হচ্ছে। ম্যাচের এই অবস্থায় আর বৃষ্টি না হলে জম্পেশ লড়াই তাই অপেক্ষায়।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ১৪৬ রান নিয়ে নেমে চরম বিপাকে পড়ে ভারত। দারুণ বল করতে থাকেন কিউই পেসাররা। বিশেষ করে জেমিসন ছিলেন নিখুঁত।
তার ভেতরে ঢোকা এক বলে কাবু হন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আগের দিন অফুরন্ত আত্মবিশ্বাস আর অসম্ভব দৃঢ়তা দেখিয়ে চলেছিলেন কোহলি। জেমিসনের বলটা পড়তে ভুল করে বসেন। এলবিডব্লিউর আউট রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। ১৩২ বলে মাত্র ১ চারে ৪৪ করে থামেন কোহলি।
ছয়ে নামা রিশভ পান্ত নিজের মতই খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পিচ ছিল না তেমন। জেমিসনের বাইরের বল তাড়া করে মাত্র ৪ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয় ফেরেন কিপার ব্যাটসম্যান।
আজিঙ্কা রাহানে টিকে ছিলেন। রবীন্দ্র জাদেজাকে এক পাশে রেখে রান আনছিলেন। কিন্তু ফিফটির এক রান আগে ওয়েগনারের বলে বাজে শটে বিদায় হয় তার।
রবীচন্দ্রন অশ্বিন নেমে খেলেন ওয়ানডে মেজাজে। দেখার মতো কিছু শট আসে তার ব্যাটে। বেশি ড্রাইভ খেলতে যাওয়া তার কাল হয়েছে। সাউদির বলে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারির মারার পরের বলে ফাঁদে পড়েন। এবার ড্রাইভে প্রলুব্ধ করে অশ্বিনকে স্লিপে ক্যাচ বানান সাউদি।
টেল খোলে যাওয়ায় জাদেজাও আর বিশ্বাস পাননি। লাঞ্চ থেকে ফিরে তিনি শিকার বোল্টের। টপাটপ বাকি দুই উইকেট উপড়ে ইনিংস মুড়ে দেন আগ্রাসী জেমিসন।
নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার বুঝেছিলেন রান করা হবে কঠিন। তাই টিকে থাকার মন্ত্র নেন তারা। ইশান্ত, জাসপ্রিট বুমরাহ, মোহাম্মদ শামিদের সামলে দেন। হতাশা বাড়তে থাকে ভারতের।
৩৫তম ওভারে গিয়ে ভারত পায় প্রথম সাফল্য। অশ্বিনকে উড়াতে গিয়ে শর্ট এক্সট্রা কাভারে ধরা পড়েন ১০৪ বলে ৩০ করা টম ল্যাথাম। ৭০ রানে গিয়ে প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা।
এরপর উইলিয়ামসনকে নিয়ে ছুটে চলা শুরু কনওয়ের। পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ফিফটিও তুলে নিয়েছিলেন। তবে দলের রান একশো পেরিয়ে যাওয়ার পর চাপে পড়ে যায় তারা। জাদেজা, বুমরাহ, ইশান্ত মিলে দারুণ নিয়ন্ত্রণ রেখে টানা ২৬ বলে কোন রান দেননি। ইশান্ত ছোট স্যুয়িংয়ে ভুগাতেও থাকেন কনওয়েকে। চাপ বাড়তে থাকায় মিডল স্টাম্প বরাবর বল পেয়ে উড়াতে গিয়ে মিড অনে ধরা পড়েন ৫৪ করা কনওয়ে।
এরপর আর ২ বল খেলা হয়েছে। দিনের খেলার প্রায় ১৫ ওভার বাকি থাকতে আলোক স্বল্পতায় শেষ হয় খেলা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত প্রথম ইনিংস: ৯১.১ ওভারে ২১৭ (রোহিত ৩৪, গিল ২৮, পূজারা ৮, কোহলি ৪৪, রাহানে ৪৯, পান্ত ৪, জাদেজা ১৫, অশ্বিন ২২, ইশান্ত ৪, বুমরাহ ০, শামি ০* ; সাউদি ১/৬৪, বোল্ট ২/৪৭, জেমিসন ৫/৩১, গ্র্যান্ডহোম ০/৩২, ওয়েগনার ২/৪০)
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৪৯ ওভারে ১০১/২ (ল্যাথাম ৩০, কনওয়ে ৫৪, উইলিয়ামসন ১২*, টেইলর ০* ; ইশান্ত ১/১৯, বুমরাহ ০/৩৪, শামি ০/১৯, অশ্বিন ১/২০, জাদেজা ০/৬)
Comments