এবারও থাকতে পারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

বিভিন্ন মহলের তদবিরের কারণে আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রশ্ন করা ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগটি আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরেও সরকার চালু রাখতে পারে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

বিভিন্ন মহলের তদবিরের কারণে আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রশ্ন করা ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগটি আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরেও সরকার চালু রাখতে পারে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

তবে, অঘোষিত সম্পদের মালিকদেরকে বর্তমানে চালু থাকা ১০ শতাংশ কর দিয়ে সেটিকে বৈধ করার সুযোগের পরিবর্তে শতকরা ১০ শতাংশ জরিমানা ও ২৫ শতাংশ কর দিতে হতে পারে। বর্তমান সুযোগটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩০ জুন।

নতুন এই উদ্যোগটি চালু হলে আয়কর রিটার্নে ঘোষিত সম্পদের ক্ষেত্রে কার্যকর করের হার হবে ২৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ।

একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে কার্যকর করের হারটি হবে সর্বোচ্চ। কারণ, এ মুহূর্তে ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ হার ২৫ শতাংশ।

বাজেট বক্তৃতায় ‘শর্তহীনভাবে কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়াটি জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরেও বজায় থাকবে কি না’ সে বিষয়টি এড়িয়ে যান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বর্তমানে যে সুযোগটি চালু আছে, সেটির মাধ্যমে ১০ হাজার ৪০৪ জন করদাতা প্রায় ১৪ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদকে এই অর্থবছরে বৈধ করেছেন। এই সুযোগের সমালোচনা করে অর্থনীতিবিদ ও নাগরিক সংস্থাগুলো অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, এটি সৎ করদাতাদেরকে নিরুৎসাহিত করে এবং দুর্নীতি ও ঘুষ দেওয়াকে উৎসাহিত করে।

তবে, সরকার এখনো কিছু পরিমাণ কর দেওয়ার বিনিময়ে অঘোষিত সম্পদ ব্যবহার করে বাড়ি, জমি, দালান ও অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সুযোগ রেখেছে। এক্ষেত্রে করের হারটি নির্ভর করে সম্পত্তিটি কোন এলাকায় অবস্থিত, তার ওপর। এই নিয়মের আওতায় সরকারি সংস্থাগুলো চাইলে আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারে।

বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, কালো টাকার মালিকদেরকে প্রতি স্কয়ার ফুট হিসেবে কর দিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার মাধ্যমে অঘোষিত আয়কে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

এক্ষেত্রে মোট করের ওপর শতকরা ১০ শতাংশ হারে জরিমানা আরোপ করা হবে, জানান এক কর্মকর্তা।

জমি ছাড়া অন্যান্য সম্পত্তি, যেমন: নগদ অর্থ, ব্যাংকে আমানত রাখা অর্থ, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য আর্থিক স্কিম এবং ইন্সট্রুমেন্টের মালিকরা অঘোষিত সম্পদকে বৈধ করার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পাবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

মহামারির সময়ে কর আদায়ের কার্যক্রমকে গতিশীল করার উদ্দেশ্যে সরকার এই ঢালাও সুযোগটির প্রচলন করেছিল, যেটির মাধ্যমে বৈধ করা সম্পদের উৎস নিয়ে কোনো সংস্থা কোনো ধরনের প্রশ্ন করতে পারবে না বলে নিয়ম করা হয়।

১১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা মূল্যমানের অঘোষিত ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর), সঞ্চয়পত্র, নগদ অর্থ ও অন্যান্য সম্পদকে কর দেওয়ার মাধ্যমে বৈধ করা হয়েছে।

করদাতারা দুই হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আবাসনে বিনিয়োগ করে এবং ২৮২ কোটি টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে বৈধ করেছেন।

২০১৯-২০২০ সালের আগে ১৫ বছরে সর্বমোট ১৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার অঘোষিত সম্পদকে বৈধ করা হয়েছিল।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments