কে হচ্ছেন বাংলা একাডেমির নতুন মহাপরিচালক

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, সেলিনা হোসেন ও ফকরুল আলম। (বাম দিকে থেকে)

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নেই এক মাস দুই দিন। চলছে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দিয়ে। দায়িত্ব পালন করছেন একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান। বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের অনন্য প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ এই পদে সর্বশেষ ছিলেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত এই কবি গত ২৪ মে মারা যাওয়ার পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদটির জন্যে সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে।

যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে শীর্ষে আছেন বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। তিনি ষাটের দশকের শক্তিমান কবি হিসেবে সারাদেশে পরিচিত। এর আগে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও জাতীয় পর্যায়ে নজরুল জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির শীর্ষ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এরপরেই আছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিনি প্রাবন্ধিক ও গবেষক হিসেবে বিদগ্ধ পাঠকের কাছে জনপ্রিয়। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ১১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে চার বছরের জন্য রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়। গত ১০ জুন তার মেয়াদ শেষ হয়।

আলোচনায় আছেন কথ্যসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম নারী পরিচালক হন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন চাকরি থেকে অবসর নেন। তবে, তিনি মহাপরিচালক হলে বাংলা একাডেমির ইতিহাসের দ্বিতীয় নারী মহাপরিচালক হবেন। প্রথম নারী মহাপরিচালক ছিলেন ড. নীলিমা ইব্রাহিম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র ইংরেজি অনুবাদক ফকরুল আলমের নামও শোনা যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক ও ইউজিসি অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি’র পরিচালক হিসেবে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।

আলোচনায় আছেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক ও জাতীয় কবিতা পরিষদের সেক্রেটারি কবি তারিক সুজাতও।

মহাপরিচালক নিয়োগের বিষয়ে বাংলা একাডেমি আইনের ২৬ ধারার দুই নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক এরূপ কোনো ফেলো অথবা প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ বা গবেষকদের মধ্য থেকে সরকার মহাপরিচালক নিয়োগ করবে এবং তার চাকরির শর্তাবলী সরকার স্থিরীকৃত করবে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক এএইচএম লোকমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নিয়োগে আর বেশি সময় লাগবে না বলেই মনে হচ্ছে। তবে, কে আসবে জানি না। কারণ, আমরা একাডেমি থেকে কারো নামও প্রস্তাব করি না। এটি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।’

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খুব দ্রুত বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। আমরা প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। তিনি তাদের মধ্য থেকে যোগ্য ব্যক্তিকে মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেবেন।’

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা তিন জনকে হারিয়েছি। যাতে বাংলা একাডেমির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের জন্যেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। এমন মেধা-মননের মানুষ আর পাব কি না, সন্দেহ।’

‘এখন তাদের স্থানে কারা আসবে জানি না। প্রত্যাশা করব যোগ্য লোকই পাবে বাংলা একাডেমি’, বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। গত ৭ মে থেকে যুগ্মসচিব অসীম কুমার দে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১৯ সালের ১৩ মে থেকে পরিচালক ছিলেন কবি ও সাংবাদিক মিনার মনসুর। তার মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ৬ মে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদে তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Tax authority to split. Will it bring the desired outcome?

Touted as a historic overhaul, the move has ignited debate over whether it will drive meaningful reform or merely deepen the layers of bureaucracy, given the NBR's persistent failure to meet its targets.

14h ago