১০ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল

দেশের বিভিন্ন স্থানের ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প প্রস্তাব বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের বিভিন্ন স্থানের ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প প্রস্তাব বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

কয়েক বছর ধরে এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এগুলো বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছিল বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি জানান, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পায়রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এ ছাড়া, রামপাল ও মাতারবাড়ী প্রকল্পের নির্মাণকাজও এগিয়ে চলছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে কয়লা থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা।’

‘এখন আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তরলকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও পেট্রোলিয়াম ব্যবহারের পরিকল্পনা করছি। তবে, এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কীভাবে চালু করা হবে, সেই পরিকল্পনা এখনো করেনি সরকার’, যোগ করেন তিনি।

২০০৮ সালের পর যে ১৮টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন পায়, বাতিল হওয়া ১০টি প্রকল্প সেগুলোর মধ্যে রয়েছে।

এ ১০টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে— মুন্সিগঞ্জের ৫২২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, ঢাকার ২৮২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, চট্টগ্রামের ২৮২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, মহেশখালির এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, আশুগঞ্জের এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, গাইবান্ধার এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশের ৭০০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প, সিপিজিসিএল-সুমিতমো করপোরেশনের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প।

এ ছাড়া, নির্মাণকাজে প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হলে সরকার আরও দুই-একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিল করে দিতে পারে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

পায়রার এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বর্তমানে বিদুৎ উৎপাদন করছে। বাংলাদেশ-চীনের যৌথ প্রকল্প এটি। এ ছাড়া, রামপালের এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রামের এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র, বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ীর এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কক্সবাজারের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাঠ পর্যায়ের কাজ এগিয়ে চলছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে প্রতিদিন পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মেগাওয়াট যোগ করে আসছে।

পায়রার আগে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার ৫২৫ মেগাওয়াটের বিদুৎকেন্দ্রটি দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২৩ সাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে।

১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। সংগঠনটি বলছে, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় উদ্যোগ।

বাপার সভাপতি সুলতানা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারকে পর্যায়ক্রমে সব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের একটি রোডম্যাপ তৈরির করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’

এলএনজিও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে উল্লেখ করে সরকারকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

তবে, নসরুল হামিদ বলেন, ‘কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আলট্রা সুপার কিট্রিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে। পরিবেশের ওপর একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাব একটি ইটভাটার প্রভাবের চেয়েও কম।’

জাপানের ইয়োকোহামা শহরের মাঝখানে এমন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানকার মানুষ কি মারা যাচ্ছে?’

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English

Cyber Security Agency exists only in name

In December 2018, when the Digital Security Agency was formed under the Digital Security Act, it was hoped that the cybersecurity of important government sites with critical citizen data such as the Election Commission’s national identity database and the Office of the Registrar of Birth and Death  would be robust.

10h ago