করোনায় শিক্ষক দম্পতির মৃত্যু, হাসপাতালে লড়ছে ছেলেও

করোনায় মারা যাওয়া শিক্ষক দম্পতি জিয়াউল হায়দার মন্ডল ও উম্মে কুলসুম। ছবি: সংগৃহীত

‘আল্লাহ, আমার বাবা-মাকে তো কেড়ে নিয়েছ। এতিম হয়ে গেছি। এখন আমার আমার বড় ভাইকেও কেড়ে নিও না। তাকে সুস্থ করে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।’

কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো বলছিল লালমনিরহাটের স্কুলশিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন (১৪)।

শহরের সাপ্টানা বাজার এলাকার শিক্ষক দম্পতি জিয়াউল হায়দার মন্ডল দুদুল এবং উম্মে কুলসুম হ্যাপির ছেলে সে। কোভিড-১৯ তার বাবা-মা দুজনকেই কেড়ে নিয়েছে। একমাত্র ভাই সাদ্দাম হোসেনও (২৪) করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তার সুস্থ হয়ে ফিরে আসা নিয়েও উদ্বেগে আছেন স্বজনরা।

জিয়াউল হায়দার মন্ডল দুদুল পাশের কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ মরানদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আর তার স্ত্রী উম্মে কুলুসুম হ্যাপি ছিলেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার সাকোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

গত ৭ জুন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান জিয়াউল। এর তিন দিন পর হ্যাপি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকেও রংপুরে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার বিকালে মারা যান তিনি।

তাদের বড় ছেলে সাদ্দাম হোসেনও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি। তার শারীরিক অবস্থাও খারাপের দিকে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, তার বাবার সেবা করতে গিয়ে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর মায়ের সেবা করতে গিয়ে ভাই।

‘আমি কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। আল্লাহ আমাকে কঠিন পরীক্ষায় ঠেলে দিয়েছে। অসহায় হয়ে গেছি আমি’, বলে সে। 

লালমনিরহাট জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত জেলায় ৬,৯৪২ জনের নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৩৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১২২জন। মারা গেছেন ২১ জন।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

6h ago