লকডাউনের খবরে দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু, মুরগি, সবজির
লকডাউনের খবরে রাজধানীর বড় কয়েকটি পাইকারি এবং খুচরা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে আজ ছিল উপচে পড়া ভিড়। সারাদিন বাজার স্থিতিশীল থাকলেও বিকেল থেকে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু, মুরগিসহ বিভিন্ন শাক-সবজির।
ঢাকার বড় পাইকারি ও খুচরা বাজার কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই আজ ক্রেতাদের তুলনামূলক বেশি ভিড় ছিল। বিভিন্ন ধরনের মসলা, মাংস, আলু, পেঁয়াজ, তেল, ডাল, চিনির মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি বেশি বিক্রি হয়েছে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী।
ইউসুফ জেনারেল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. ইউসুফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গতকাল লকডাউনের ঘোষণা আসার পর রাতেই আশপাশের ক্রেতারা বাজারে ভিড় জমাতে শুরু করেন। আজ দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া যায় সেভাবেই ক্রেতারা কিনেছেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি বিক্রি হয়েছে।
তবে কাঁচা বাজারে বিকেল থেকেই বিভিন্ন শাকসবজির দাম বাড়তে শুরু করে। বিক্রেতারা বলেছেন, দুপুর থেকে মজুত কমতে শুরু করায় বিকেলে দাম বাড়তে শুরু করে।
আলুর আড়ত বিক্রমপুর ভাণ্ডারে দৈনিক দেড় শ থেকে দুই শ বস্তা আলু বিক্রি হয়। এই প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী মো. সবুজ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সাধারণত তিন দিনের বিক্রির সমপরিমাণ আলু মজুত রাখেন তারা। আজ একদিনেই প্রায় ৫০০ বস্তা আলু বিক্রি হয়ে গেছে। বিকেলে শ্যামবাজারের আড়ত থেকে প্রতি কেজিতে দুই টাকা বেশি দরে আলু কিনতে হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত ১৬-১৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করলেও পরে ১৮-২০টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে তাকে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২২-২৫ টাকায়।
ঈদুল আযহা সামনে থাকায় এই সময়টায় পেঁয়াজের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকে। আজ বিকেলে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০-৪৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ সকালেই পেঁয়াজের দর ছিল ৩৫-৪১ টাকা। একাধিক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী দাম বৃদ্ধির জন্য অস্বাভাবিক বেশি চাহিদাকে দায়ী করেছেন। মজুত বাড়লে দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। দাম বেড়ে যাওয়ার পর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কারওয়ানবাজার, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, তেজকুনিপাড়ার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পটল, ঝিঙ্গা, টমেটো, বেগুন, চিচিঙ্গা ৫০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। গতকালও এসব পণ্যের দাম ছিল ৪০-৭০ টাকা কেজি। দোকানদাররা জানান, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সব সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে।
বুয়েটের কর্মচারী আব্দুর রাজ্জাক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পলাশীর চেয়ে কারওয়ান বাজারে জিনিসপত্রের দাম ১০-২০ শতাংশ কম থাকে। সেই আশায় এসেছিলাম। যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে বেশি দামে বাজার করতে হয়েছে। তবুও কিছুটা সাশ্রয় হয়েছে।' দুই সপ্তাহ লকডাউনের পূর্বানুমান করেই বাজার করেছেন তিনি।
Comments