অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে কষ্টের জয়ে কোয়ার্টারে ইতালি

শক্তিমত্তা, ঐতিহ্য ও সাম্প্রতিক সাফল্য; সবদিক থেকেই এগিয়ে ছিল ইতালিয়ানরা। ম্যাচের শুরুটাও তেমনভাবে করেছিল দলটি। কিন্তু বিরতির পর আজ্জুরিদের কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। ভাগ্য সঙ্গে থাকলে এ অর্ধে গোলও পেতে পারতো দলটি। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর ম্যাচে লড়াই চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত কুলিয়ে উঠতে পারেনি অস্ট্রিয়া। প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নকআউট পর্বে উঠে শেষ ষোলোতেই থামে তাদের স্বপ্নযাত্রা।

শক্তিমত্তা, ঐতিহ্য ও সাম্প্রতিক সাফল্য; সবদিক থেকেই এগিয়ে ছিল ইতালিয়ানরা। ম্যাচের শুরুটাও তেমনভাবে করেছিল দলটি। কিন্তু বিরতির পর আজ্জুরিদের কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। ভাগ্য সঙ্গে থাকলে এ অর্ধে গোলও পেতে পারতো দলটি। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর ম্যাচে লড়াই চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত কুলিয়ে উঠতে পারেনি অস্ট্রিয়া। প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নকআউট পর্বে উঠে শেষ ষোলোতেই থামে তাদের স্বপ্নযাত্রা।

শনিবার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অস্ট্রিয়াকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারায় ইতালি। তিনটি গোলই আসে অতিরিক্ত সময়ে। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ গোলশূন্য থাকলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ইতালির হয়ে গোলদুটি করেন ফেদেরিকো কিয়েসা ও মাত্তেও পেসিনা। সাসা কালাজদিচ গোল করেন অস্ট্রিয়ার পক্ষে।

এবারের ইউরোতে যেন উড়ছিল ইতালি। গ্রুপ পর্বে ৭টি গোল দিলেও কোনো গোল হজম করেনি। সবমিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচ ক্লিনশিট ছিল তাদের। তবে সেই স্বপ্নযাত্রা এদিন থেমেছে তাদের। গোল হজম করে দলটি। তবে এর আগে নিজেদের ইতিহাসের নতুন রেকর্ড করেছে তারা। সময়ের হিসেবে ১১৬৮ মিনিট পর গোল খায় দলটি।

এ জয়ে টানা ৩১ ম্যাচে অপরাজিত রইল রোবার্তো মানচিনির দল। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষেও ৬১ বছর অপরাজিত তারা। সবশেষ ১৯৬০ সালে অস্ট্রিয়ার কাছে হেরেছিল ইতালি। এরপর টানা ১৪ ম্যাচে অপরাজিত দলটি।

কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য কঠিন প্রতিপক্ষ পেতে যাচ্ছে ইতালি। আসরের অন্যতম ফেভারিট দল বেলজিয়াম ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের মধ্যকার বিজয়ী দলের সঙ্গে মোকাবেলা করবে তারা। আগামী ৩ জুলাই মিউনিখে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।

এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলতে থাকে ইতালি। একাদশ মিনিটে অস্ট্রিয়ান শিবিরে প্রথম শটটা নেন লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলা। যদিও লক্ষ্যভ্রষ্ট। তবে এর দুই মিনিট পর লোরেঞ্জো ইনসিনিয়ের শট ঠেকাতে কিছুটা পরীক্ষা দিতে হয় অস্ট্রিয়ান গোলরক্ষক ড্যানিয়েল ব্যাচমানকে। ১৭তম মিনিটে তো বড় বাঁচা বেঁচে যায় তারা। স্পিনাজ্জোলার কাটব্যাক থেকে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন নিকোলা বারেয়া। কিন্তু পা দিয়ে কোনো মতে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন ব্যাচমান। 

পরের মিনিটে ভালো সুযোগ ছিল অস্ট্রিয়ারও। পাল্টা আক্রমণ থেকে মার্সেল সাবিতজারের দারুণ এক থ্রু বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও আকাশে ওড়ান মার্কো আর্নাউতোভিচ। ৩২তম মিনিটে ভাগ্যকে দুষতেই পারে ইতালিয়ানরা। ডান প্রান্ত থেকে দূরপাল্লার অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন চিরো ইম্মোবেলে। কিন্তু বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলে হতাশ হতে হয় দলটিকে। ১১ মিনিট পর আবারও দুর্দান্ত ব্যাচমান। জিওভান্নি দি লোরেঞ্জোর শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান এ গোলরক্ষক। ফলে গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যেতে হয় দলটিকে।

দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রিয়া। এ অর্ধে জোরালো আক্রমণগুলো করে তারাই। প্রথমার্ধে ইতালির ১২টি শটের বিপরীতে অস্ট্রিয়া নেয় ২টি। দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রিয়ার শট নেয় আরও ৭টি। অন্যদিকে এ অর্ধে ইতালির শট ৬টি। ৫১তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। যদিও রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রিকিক পেয়েছিল অস্ট্রিয়া। প্রতিবাদ করায় দুই ইতালিয়ান খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে রেফারি। তবে সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি অস্ট্রিয়া। ভালো নিয়েছিলেন ডেভিড আলাবা। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৬২তম মিনিটে সাবিতজারের শট লিওনার্দো বনুচ্চির ব্লকে কর্নার না হলে বিপদ হতে পারতো ইতালির। ৬৫তম মিনিটে ইতালিয়ানদের স্তব্ধ করে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। লক্ষ্যভেদ করেছিলেন আর্নাউতোভিচ। কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয় সে গোল। ৭২তম মিনিটে সুযোগ ছিল ইতালিরও। ইনসিনিয়েকে দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন ইম্মোবেলে। কিন্তু ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি এ আতালান্তা তারকা।

৭৫তম মিনিটে পেনাল্টি পায় অস্ট্রিয়া। কিন্তু অফসাইডের কারণে হতাশ হয় তারা। আট মিনিট পর স্পিনাজ্জোলার কাটব্যাক থেকে ডমিনিকো বেরার্দির নেওয়া ব্যাকভলি ঠিকভাবে সংযোগ হলে বিপদ হতে পারতো অস্ট্রিয়ার। ফলে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা।

অতিরিক্ত সময়ে অস্ট্রিয়ান খেলোয়াড়দের মাঝে কিছুটা ক্লান্তির ছাপ দেখা যায়। সে সুযোগে দুটি গোল আদায় করে নেয় ইতালি। ৯৪তম মিনিটেই গোলরক্ষক বরাবর শট না নিলে গোল পেতে পারতেন কিয়েসা। তবে পরের মিনিটে আর হতাশ করেননি এ জুভেন্টাস তারকা। স্পিনাজ্জোলার দারুণ ক্রস কনরাদ লেইমারকে বোকা বানিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জোরালো ভলিতে বল জালে পাঠান তিনি।

১০৪ মিনিটে ইনসিনিয়ের ফ্রিকিক অস্ট্রিয়ান গোলরক্ষক ব্যাচমান ঝাঁপিয়ে কর্নারের রক্ষা করেন। তবে পরের মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইতালিয়ানরা। ডি-বক্সে জটলা থেকে ফ্রান্সিস্কো আকের্বির কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন পেসিনা।   

বিরতির পর ফের জেগে ওঠে অস্ট্রিয়া। প্রথম মিনিটেই ব্যবধান কমাতে পারতো তারা। লুইস স্কাউবের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইতালিয়ান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারোম্মা। পরের মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারতো ইতালি। অসাধারণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি খেলোয়াড় আন্দ্রেয়া বেলত্তি। কিন্তু ঠিকমতো শটই নিতে পারেননি তিনি।

১০৯তম মিনিটে একক দক্ষতায় নিজের অর্ধ থেকে বল নিয়ে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন দি লোরেঞ্জো। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। দুই মিনিট পর অবিশ্বাস্য এক মিস করেন সাবিতজার। ফাঁকা পোস্ট পেয়েও বাইরে মারেন তিনি। এর দুই মিনিট পর ব্যবধান কমায় তারা। কর্নার থেকে পাওয়া বলে নিচু হয়ে দারুণ এক হেডে ব্যবধান কমান কালাজদিচ। এরপর আর কোনো গোল না হলে জয়ের সন্তুষ্টি নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইতালি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago