রাবিতে ‘অবৈধ’ নিয়োগে ‘স্থগিতাদেশ’ প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের শেষ দিনে দেওয়া ‘অবৈধ নিয়োগে’ নিয়োগপ্রাপ্তদের পদায়নে দেওয়া ‘স্থগিতাদেশ’ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আজ সোমবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনের সামনে ‘অ্যাডহকে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এই দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে চাকরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা মো রাসেল বলেন, ‘আমরা এখনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু, আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্বাভাবিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হতে দেবো না। আমাদের চাকরিতে পদায়নের সুযোগ না দিলে সবকিছু অচল করে দেওয়া হবে।’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমরা জামাত-শিবিরের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করেছি। সাবেক উপাচার্য আমাদেরকে চাকরি দিয়ে গেছেন। অথচ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, সেই চাকরিতে আমাদের পদায়নে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। অবিলম্বে এই আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।’
সেসময় উপস্থিত চাকরিপ্রাপ্ত, ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা তাদের বক্তব্যে স্ব স্ব পদে পদায়নে অনুমতির দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা গত ২২ জুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তাদের চাকরিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার বর্তমান প্রশাসনের হাতে নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই নিয়োগ “অবৈধ” ঘোষণা করেছে এবং একইসঙ্গে যোগদান প্রক্রিয়া স্থগিতের বিষয়ে আমাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ কর্মদিবস ৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে যান। মন্ত্রণালয় সেদিনই এই নিয়োগ ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করে।
সে পরিপ্রেক্ষিতে ৮ মে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এই ১৩৭ জনের চাকরিতে যোগদান প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে তদন্ত কমিটি গত ২৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত কমিটি এই ‘অবৈধ’ নিয়োগে বিদায়ী উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে। প্রতিবেদনে আবদুস সোবহানের দেশ ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে, এ পরিপ্রেক্ষিতে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর মধ্যেই নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদানের জন্য গত এক মাস যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করছেন।
Comments