ইউরোজুড়ে কতটা বিবর্ণ ছিলেন এমবাপে?
‘এই পেনাল্টির জন্য আমি দুঃখিত। আমি দলকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। এই ঘটনার পর ঘুমানো কঠিন হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে যে খেলাটাকে এত ভালোবাসি, সেখানে এমন উত্থান-পতন থাকেই।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে হতাশা ও দুঃখ প্রকাশ করে আবেগঘন কথাগুলো লিখেছেন কিলিয়ান এমবাপে। সোমবার রাতে সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে ২০২০ ইউরোর শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেয় তার দল ফ্রান্স। অথচ তাদের গায়ে ছিল আসরের হট ফেভারিটের তকমা।
বুখারেস্টের অ্যারেনা ন্যাশনালিয়াতে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে রোমাঞ্চকর ম্যাচটির ফল ছিল ৩-৩। এরপর টাইব্রেকারে ফরাসিদের শেষ পেনাল্টিটি নিতে গিয়ে মিস করেন বসেন এমবাপে। তার শট রুখে দিয়ে সুইসদের স্মরণীয় জয়ের উল্লাসের জোয়ারে ভাসান গোলরক্ষক ইয়ান্নিক সোমার।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এমবাপে। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) এই তারকা স্ট্রাইকার ফ্রান্সের শিরোপা জয়ে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চার গোল করে তিনি জিতেছিলেন বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার। তাই স্বভাবতই এবারের ইউরোতে বাড়তি নজর ছিল তার দিকে। কারণ, সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন আরও পরিণত। কিন্তু আসরজুড়ে তিনি থেকেছেন নিজের ছায়া হয়ে।
২২ বছর বয়সী এমবাপের পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যায়, চার ম্যাচে তিনি কোনো গোল পাননি, অ্যাসিস্ট করেছেন একটি। তিনি বলের পজিশন হারিয়েছেন ৬২ বার। তার পা থেকে ১২ শট আসলেও নয়টিই ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। মোট ৯৬টি পাস দিয়ে ৮৪টিতে সতীর্থদের খুঁজে নিতে পারেন তিনি। অর্থাৎ, পাসে তার সফলতার হার শতকরা ৮৭.৫ ভাগ।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এমবাপে ছিলেন ইউরোর আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় উজ্জ্বল। করিম বেনজেমার প্রথম গোলের যোগান দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আসল কাজটি অর্থাৎ গোল করতে ব্যর্থ হন। তার নেওয়া ছয়টি শটের একটিও ছিল না লক্ষ্যে! পাঁচটি গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়, একটি হয় ব্লকড।
তবে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতার ছাপ এমবাপে রাখেন পেনাল্টি শ্যুটআউটে। তার শট সোমার আটকে দেওয়ায় ছিটকে যায় ফ্রান্স। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে কোচ দিদিয়ের দেশম জানান, শেষ শটটি এমবাপে স্বেচ্ছায়ই নিতে চেয়েছিলেন।
সাফল্যে মোড়ানো ক্যারিয়ারে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি আসায় এমবাপের হৃদয়ে বাজছে করুণ সুর। তবে সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় জানিয়েছেন তিনি , ‘আমি জানি, সমর্থকরা হতাশ। তবুও তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই সবসময় সমর্থন দেওয়া ও বিশ্বাস রাখার জন্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, পরের পরীক্ষাগুলোর জন্য আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসা।’
Comments