আমার জীবনে কোনো অপূর্ণতা নেই: আবুল হায়াত

আবুল হায়াত। ছবি: স্টার

একুশে পদক প্রাপ্ত খ্যাতিমান অভিনেতা আবুল হায়াত। অনেক কালজয়ী নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।

অয়োময়, বহুব্রিহী, নক্ষত্রের রাত, আজ রবিবার, নদীর নাম নয়নতারা, জোছনার ফুল, দ্বিতীয় জন্ম, শুকনো ফুল রঙিন ফুল, খেলা, এইসব দিনরাত্রি নাটকগুলো তাকে এনে দিয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

মঞ্চে তিনি প্রথম অভিনয় করেন 'বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো' নাটকে। সুদীর্ঘকাল ধরে তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া বরেণ্য এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হচ্ছে- আগুণের পরশমণি, তিতাস একটি নদীর নাম, জয়যাত্রা, দারুচিনি দ্বীপ, অজ্ঞাতনামা, কেয়ামত থেকে কেয়ামত ইত্যাদি।

আজ মঙ্গলবার এই গুণীর ৭৭তম জন্মদিন।

অভিনয় জীবনের নানা বিষয় নিয়ে আবুল হায়াত কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

 

৭৭ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে অভিনেতা হিসেবে কোনো অপূর্ণতা আছে কী?

না। আমার জীবনে কোনো অপূর্ণতা নেই। সব সময়ই আমার চাওয়া কম ছিল। এ জন্যই বোধ হয় বেশি পেয়েছি। আমি কখনোই বলব না কিছু পাইনি। যা চেয়েছি তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। আমি সাফল্য খুঁজিনি, শিল্পকে ভালোবেসে গেছি। শিল্পের পথে হেঁটেছি, এখনো শিল্পের পথেই হাঁটছি।

নাটকের সঙ্গে আপনার সখ্যতা বেশি। টেলিভিশন নাটক এখন কী অবস্থায় আছে?

নাটক এখন নানা কারণে বাণিজ্যিক হয়ে গেছে। শিল্পের প্রতি ভালোবাসা কমে গেছে। সংখ্যার দিক দিয়ে প্রচুর নাটক হচ্ছে, কোয়ালিটি কমে গেছে। কম টাকায় নাটক চালিয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা গড়ে উঠছে। এখন কিছু মানুষ যেহেতু এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন, তাদেরও তো বেঁচে থাকতে হবে। তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

অভিনয় শিল্পী বা কলাকুশলীর অভাব আছে কী আমাদের?

না। আমাদের শিল্পী ও কলাকুশলীর অভাব নেই। কিন্তু সুযোগ কম। আমাদের ভালো নির্মাতা আছেন, ভালো নাট্যকার আছেন, ভালো অভিনেতা আছেন, ভালো ক্যামেরাম্যান আছেন। তরুণরা এগিয়ে এসেছেন। তারা বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন।

এ দেশে টেলিভিশন নাটকের সবচেয়ে বড় সংকট কী?

সবচেয়ে বড় সংকট বাজেট। আমাদের বাজেটে ঘাটতি থাকলেও আমি আশাবাদী একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।

দেশ সেরা নাটকের দল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় আপনার নিজের দল। একটা সময়ে থিয়েটারে সরব থাকলেও অনেকদিন মঞ্চে নেই।

মঞ্চে ফেরার অপেক্ষায় আছি। কোভিডের কারণে পিছিয়ে গেছে। দুটি নাটক দিয়ে মঞ্চে ফিরতে চেয়েছিলাম। অনলাইনে রিহার্সেলও করেছিলাম। কোনো না কোনো ভাবে মঞ্চের সঙ্গে থাকতে চাই।

আর কী চাওয়া আছে আপনার?

নির্দিষ্ট কোনো চাওয়া নেই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই। নতুন প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করেছি। তাদের সঙ্গে আরও কাজ করতে চাই। লেখালেখির কিছু কাজ আছে, আরও লিখতে চাই।

জীবনের শুরুতে লক্ষ্য কী ছিল?

ওই রকম কোনো লক্ষ্য নিয়ে জীবন শুরু করিনি। বাবা-মার একমাত্র ছেলে ছিলাম। তারা কখনো কিছু চাপিয়ে দেননি। পড়ালেখায় ভালো ছিলাম সব সময়ই। ছোটবেলা থেকেই অভিনয় আমাকে ভীষণ টানে। মন-প্রাণ দিয়ে অভিনয়ই করতে চেয়েছি। সেই দিক থেকে মনে হয়, অভিনেতা হওয়ার একটা লক্ষ্য হয়তো ছিল। কিছুটা হলেও তা পেরেছি।

জন্মদিন কেমন কাটছ?

সকাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রচুর মানুষের কল পেয়েছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অনেকে। অবশ্য গত রাত থেকেই শুরু হয়েছে এসব। মানুষের ভালোবাসায় আমি আপ্লুত। জীবন চলতেই থাকবে, আবার ফুরিয়েও যাবে। থেকে যাবে কর্মটা। মানুষের ভালোবাসায় জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া যায়। মানুষ আমাকে ভালোবাসেন জানি। জন্মদিন এলে সেই ভালোবাসার প্রকাশ আরও বহুগুণ বেড়ে যায়।

Comments

The Daily Star  | English
International Crimes Tribunal 2 formed

Govt issues gazette notification allowing ICT to try political parties

The new provisions, published in the Bangladesh Gazette, introduce key definitions and enforcement measures that could reshape judicial proceedings under the tribunals

40m ago