মই দিয়ে উঠে সেতু পারাপার

রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় নৌকায় করে মাইনী নদীর মাঝ পর্যন্ত গিয়ে মই বেয়ে সেতুতে উঠতে হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ বছর দশেক আগে লংগদু উপজেলায় একটি সেতু নির্মাণ করলেও সেতু পারাপার করতে হয় মই দিয়ে। নৌকায় করে মাইনী নদীর মাঝ পর্যন্ত গিয়ে মই বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে।

মাইনী নদীর মাঝ পর্যন্ত সেতু। ছবি: সংগৃহীত

এভাবে সেতু পার হতে গিয়ে বয়স্ক ও শিশুরা নিচে পড়ে অনেক সময় আহত হন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তবে ভোগান্তি নিয়ে বারবার জানানোর পরও সংকট কাটেনি।

জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের মাইনী নদীর ওপর রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সেতুটি নির্মাণ করে।

নৌকায় করে মাইনী নদীর মাঝ পর্যন্ত গিয়ে মই বেয়ে সেতুতে উঠতে হয়। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ এত বছর পার হলেও জেলা পরিষদ সেতুটি পারাপারের জন্যে কোনো ধারক দেয়াল নির্মাণ না করায় সেটি স্থানীয়দের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বারেক সরকার।

তিনি বলেন, সেতুটি নিয়ে আমরা খুবই ভোগান্তিতে আছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেতুটির ঠিকাদার ছিলেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সংসদের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ফিরোজা বেগম চিনু। সেতুটি নির্মাণের সময় দুর্ঘটনায় শ্রমিক আহত হয়েছিলেন বলে জানান ওই এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার জিয়াউর রহমান।

এ বিষয়ে ফিরোজা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, জেলা পরিষদ থেকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় সে সময় সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি।

সেতু নির্মাণে ধস হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ধস নয় নদীতে স্রোত বেশি থাকায় সেতুর পাইলিং সরে গিয়েছিল।'

সেতুটি কত সালে নির্মাণ করেছিলেন এবং এটি নির্মাণে কত টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলেন? উত্তরে সাবেক এমপি বলেন, 'সম্ভবত ২০১২-১৩ অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণ করেছিলাম। সেতুটি নির্মাণের জন্যে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ থেকে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলাম। তবে এই বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রকৌশলী এরশাদুল হক মণ্ডল ভালো বলতে পারবেন।'

জেলা পরিষদের প্রকৌশলী এরশাদুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেতুটিতে এখন কোনো সমস্যাই নেই।'

ঠিকাদার ৭৫ লাখ টাকা সেতুর জন্যে বরাদ্দের কথা জানালেও এই কর্মকর্তা বলেন, 'সম্ভবত ৩০-৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হতে পারে।'

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী সপ্তাহে আমি সেতুটি পরিদর্শনে যাব। সম্ভবত প্রায় ১০ বছর আগে জেলা পরিষদ সেতুটি নির্মাণ করেছিল।'

এত টাকা খরচ করে নির্মাণের এত বছর পরও সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী থাকা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে সেতুটি নির্মাণে কত টাকা খরচ হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পরে জেনে জানাবো।'

তবে একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এই তথ্য তিনি জানাতে পারেননি।

লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনুল আবেদীন ডেইলি স্টারকে বলেন 'আমরা সেতুটির ব্যাপারে ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। আশা করছি, জেলা পরিষদ দীর্ঘদিন অকেজো থাকা এই সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করার উদ্যোগ দ্রুত নেবে।'

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

13h ago