ফল নাকি ফলের জুস?

ছবি: সংগৃহীত

অনেকেই অভিযোগ করেন- পরিবারের ছোট সদস্যটি ফল খেতে চায় না। তাই বাধ্য হয়েই মায়েরা ফলের পরিবর্তে জুস দেন। তাদের ধারণা জুস থেকে একটি ফলের সমপরিমাণ পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। কিন্তু, আসলেই কী তাই?

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত একটি মৌসুমি ফল রাখা দরকারি। শাক-সবজির পাশাপাশি নিয়মিত ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও, ফল আমাদের ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

ফলে ভিটামিন সি, এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, মিনারেল ও ফাইটোক্যামিকেল উপাদান থাকে। যা রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায়। কিন্তু, ফল থেকে শুধু রসটুকু বের করে নিলে এর ভিটামিন, ফাইবার ও পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। একটি ফলে যে খাদ্য আঁশ থাকে জুস তৈরির সময় তা ভেঙে যায়। ফলে, জুসে খাদ্য আঁশের পরিমাণ কম থাকে।

এ ছাড়াও, ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম। কোনো খাবারের শ্বেতসার শর্করা কত দ্রুত রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়ায় তার পরিমাপ হলো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। ফলের জুসে উচ্চগ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে দ্রুত শরীরে চলে যায়। তাই স্বাভাবিকভাবেই ফলের জুসের চেয়ে পুরো ফল খাওয়া বেশি ভালো।

জুস তৈরিতে বেশিরভাগ সময় বাড়তি চিনি ব্যবহার করা হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। এতে থাকে ফ্রুকটোজ, গ্লুকোজ ও লেভ্যুলোজ। ফলের খোসাসহ খেলে অনেক ফাইবার বা আঁশ পাওয়া যাবে; যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

ছোট থেকে শিশুদের ফল খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। মনে রাখতে হবে ছোটবেলায় জুস দিলে শিশু বড় হয়ে আর ফল খেতে চায় না। একান্তই যদি ফলের জুস দিতে হয়, তাহলে বাড়িতে বানানো ফলের জুসে প্রাধান্য দিন। ব্লেন্ডারে না করে হাতে কচলে বা ম্যানুয়ালি জুস বানানো বেশি উপকারী। ঘরে জুস বানালে কম পানি দিন, তাতে ফলের ন্যাচারাল স্বাদ বজায় থাকবে। এ ছাড়া, পাল্পসহ জুস করুন অর্থাৎ না ছেঁকে, তাহলে কিছুটা ফাইবার পাওয়া যাবে।

সবসময় দেশি ও মৌসুমি ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। মৌসুমি ফলের পুষ্টি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নানা রঙের ফল আমাদের নানা রকম পুষ্টির জোগান দেয়। তাই সুস্থ থাকতে ফলের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিদিন ফল খান এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকুন।

Comments

The Daily Star  | English

Why Dhaka has become unliveable

To survive Dhaka, you need a strategy. Start by embracing the absurd: treat every crisis as a plot twist.

11h ago