এত হাহাকার এত কান্না ভালো লাগে না: মামুনুর রশীদ

মামুনুর রশীদ। ছবি: শেখ মেহেদী মোরশেদ

স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের নাটকের পথিকৃৎ মামুনুর রশীদ। ১৯৭২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আরণ্যক নাট্যদল। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অভিনেতা একাধারে সংগঠক, নাট্যকার ও পরিচালক। সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনাগুলো নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় দেশের কয়েক জায়গায় ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

এগুলো ঘৃণ্য কাজ। যারা এই কাজ করেছেন, সবচেয়ে ঘৃণ্য কাজ করেছেন। ঘৃণ্য কাজে কোনো বাহাদুরি নেই। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি আমরা। অথচ, এখনো আমাদের দেশে এরকম ঘৃণ্য কাজ হতে পারে, মেনে নেওয়া যায় না। মেনে নিতে কষ্ট হয়। প্রত্যেকবার দুর্গাপূজার সময় এমন ঘটনা ঘটে, দুঃখজনক। খুবই দুঃখজনক।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিষয়টি এখন ভোঁতা হয়ে গেছে। সাংস্কৃতিক আন্দোলন দরকার। এত হাহাকার, এত কান্না ভালো লাগে না। মানুষে মানুষে কেন এমন ঘটনা ঘটবে? মানুষ মানুষকে সম্মান করবে, ভালোবাসবে - এটাই হওয়া উচিত। সত্যি আমি বিস্মিত। আমি প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছি মনের ভেতরে।

এ সময়ে সাংস্কৃতিক কর্মীদের কী করা উচিত?

এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। হানাহানি এই দেশে চলবে না। চলতে দেওয়া যায় না। সাংস্কৃতিক কর্মীদের সংঘবদ্ধ আন্দোলন দরকার। সংঘবদ্ধ আন্দোলনই পারে ভালো ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে, শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে। তা ছাড়া হবে না। মনে রাখতে হবে এই মাটি আমাদের, এই দেশ আমাদের। সব মানুষকে নিয়েই এই দেশ।

শিল্পের পথে দীর্ঘ একটা জীবন কাটিয়ে দিলেন। কাজের প্রতি আপনার দায়বদ্ধতা কতটা?

আমি সবসময় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মঞ্চে কাজ করতে ভালোবাসি। ২০০১ সালে আলফ্রেড সরেনকে মেরে ফেলা হলো। তাকে নিয়ে রাঢ়াঙ নামে একটি নাটক লিখি। নাটকটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। এখনো নাটকটির মঞ্চায়ন হচ্ছে। এটা আমার দিক থেকে সাংস্কৃতিক আন্দোলন, দায়বদ্ধতাও বটে। অনেকেই এরকম সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লিখতে সাহস করেন না। আমি করি। কেননা, আমি আমার নিজের কাছে দেশের কাছে দায়বদ্ধ। এরকম বেশ কিছু নাটক আমি লিখেছি। সবশেষ 'কহে ফেসবুক' নামে একটি নাটক লিখেছি। মঞ্চায়নও শুরু হয়েছে করোনাকালে। ওটাও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে।

নাটক আমার পেশা। এটাই আমার নেশা। আমার কমিটমেন্টও। বিশেষ করে মঞ্চের কথা যদি বলি, মঞ্চে অনেক কথা বলতে পারি। টেলিভিশনে পারি না। কাজেই আমি সবসময় আমার নিজের কাছে দায়বদ্ধ।

কেমন বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেন?

সুন্দর বাংলাদেশ, সম্প্রীতির বাংলাদেশ, কোনো হানাহানি থাকবে না। ভালোবাসায় বসবাস করবে সবাই। সহিংসতা নয় ভালোবাসা থাকবে, মমতা থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

6h ago