১০ জনের এতিয়েনের বিপক্ষে পিএসজির কষ্টার্জিত জয়

একটা দুইটা নয়, চার চার চারবার গোলরক্ষককে একা পেলেন কিলিয়ান এমবাপে। পেয়েছিলেন নেইমারও। কিন্তু তাদের সামনে ১০ জনের দল নিয়ে দেওয়াল হয়ে দাঁড়ান সেঁইত এতিয়েন গোলরক্ষক এতিনি গ্রিন। অবিশ্বাস্য সেভে পিএসজির হতাশা বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতার দিনে ডিফেন্ডার মার্কুইনহোসের জোড়া গোলে স্বস্তির জয় মিলেছে পিএসজির।

প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার সেঁইত এতিয়েনের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয় পেয়েছে পিএসজি। মার্কুইনহোসের জোড়া গোলের সঙ্গে গোল পেয়েছেন আনহেল দি মারিয়া। ম্যাচের তিনটি গোলের অ্যাসিস্টই করেছেন লিওনেল মেসি। অথচ পিএসজির হয়ে এর আগে ৯টি ম্যাচ খেলেও কোনো অ্যাসিস্ট ছিল না তার। এতিয়েনের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ডেনিস বাউয়াঙ্গা।

স্বস্তির জয়ের দিনে বড় ধাক্কা খেয়েছে পিএসজি। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ইনজুরি কাটিয়ে এদিন মাঠে ফিরেছেন সের্জিও রামোস। কিন্তু তার অভিষেকের দিনে মারাত্মক ইনজুরিতে পড়ে কেঁদে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। ইয়াভ্যান ম্যাকনের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে পা মচকে পড়ে যান তিনি। পরে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয় এ ব্রাজিলিয়ানকে।

তবে দিনটি ছিল মেসির জন্য অনন্য। পিএসজির হয়ে গোল পেতে যতোটা সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে, তার চেয়ে ঢের বেশি সংগ্রাম করতে হলো একটি অ্যাসিস্ট পেতে। অথচ গত এক দশকের সেরা প্লে মেকারই এ আর্জেন্টাইন। বার্সা ছেড়ে এসে যেন চেনা ছন্দ অনেকটাই হারিয়েছিলেন। এদিন এতিয়েনের বিপক্ষেই করলেন তিনটি অ্যাসিস্ট।

জয় পেতে বেশ সংগ্রাম করলেও ম্যাচে স্পষ্ট প্রাধান্যই ছিল পিএসজির। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতাই যেন কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছিল তাদের সামনে। ৭১ শতাংশ বল পায়ে ছিল তাদের। শটও নেয় ১৫টি। যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে সেতিয়েন ৮ শটের ৪টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই মেসির পাস থেকে বল জালে পাঠিয়েছিলেন নেইমার। তবে অফসাইডে থাকায় গোল মিলেনি তাদের। দলটি এগিয়ে যেতে পারতো ১৩তম মিনিটেও। কিন্তু দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপে। হুয়ান বারনেতের থ্রু পাসে ফাঁকায় বল পেয়ে যান এ ফরাসি তরুণ। তার শট গোলরক্ষকের পায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে নষ্ট হয় সে সুযোগ

এর ১০ মিনিট পর উল্টো গোল হজম করে বসে পিএসজি। ওয়াহবি খাজরির ক্রস থেকে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে গোলরক্ষক দোনারুমাকে একেবারে ফাঁকায় পেয়ে যান টিমথি কোলোডজিয়েকাজ। তার শট ঠেকান দোনারুমা। কিন্তু আলগা বল পেয়ে যান ডেনিস বাউয়াঙ্গা। কিন্তু গ্যাবনের এই উইঙ্গারের শট আর ঠেকাতে পারেননি দোনারুমা। 

৪০তম মিনিটে মেসির বাড়ানো বলে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন নেইমার। তবে দারুণ দক্ষতায় সেভ ঠেকান এতিয়েন গোলরক্ষক। পরের মিনিটে তো অবিশ্বাস্য এক মিস করেন এমবাপে। জটলা থেকে মেসির বাড়ানো বলে একেবারে ফাঁকায় গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তিনি। কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত শট নিতে পারেননি এ তরুণ। গোলরক্ষক বরাবর শট নিলে নষ্ট হয় সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ।

নির্ধারিত সময়ে শেষ মুহূর্তে বড় ধাক্কা খায় এতিয়েন। দি মারিয়ার থ্রু বল ফাঁকায় পেতে পারতেন এমবাপে। তবে তাকে পেছন থেকে ফাউল করেন টিমথি কোলোডজিয়েকাজ। ফলে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে বহিষ্কার করেন রেফারি।

সেই ফাউলের ফ্রিকিক থেকে গোলও হজম করতে হয় স্বাগতিকদের। মেসির ফ্রিকিকে লাফিয়ে দূরের পোস্টে নিখুঁত এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন মার্কুইনহোস। ফলে সমতায় থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল। পিএসজির জার্সিতে এটাই মেসির প্রথম অ্যাসিস্ট।

৬০তম মিনিটে এক ডিফেন্ডারের ভুল ছোট ডি-বক্সে আবারও ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন এমবাপে। কিন্তু তার ভলি এবার লক্ষেই থাকেনি। পরের মিনিটে নেইমারের বাড়ানো বল ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন মেসি। পাশে ছিলেন দি মারিয়াও। তবে কোনো বিপদ হওয়ার আগেই বল ধরে ফেলেন এতিয়েন গোলরক্ষক।

৬৩তম মিনিটে এর ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দোনারুমাকে পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলেন বাউয়াঙ্গা। কিন্তু কোনো বিপদ হয়নি। ছয় মিনিট পর ইদ্রিসা গুয়ের ক্রস থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান নেইমার। কিন্তু আবারও দুর্দান্ত গ্রিন। ঠেকিয়ে দেন এ ব্রাজিলিয়ানের শট। আলগা বলে সুযোগ ছিল মেসিরও। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে লা পার্সিয়ানরা।

অবশেষে ৭৯তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় পিএসজি। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের সামনে থেকে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ফাঁকায় থাকা দি মারিয়াকে আলতো টোকায় বল বাড়ান মেসি। বলে ধরে দেখে শুনে সময় নিয়ে জোরালো শটে জালে পাঠান দি মারিয়া। পাঁচ মিনিট পর ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন নেইমার।

ম্যাচের যোগ করা সময়ে আরও এক গোল পান মার্কুইনহোস। মেসির কাটব্যাক থেকে আরও একবার লাফিয়ে উঠে লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

4h ago