ভ্রমণে সময়-খরচ বাঁচাতে ৫০টি বড় সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ কমাতে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর (সওজ) নেটওয়ার্কের অধীনে প্রায় ৫০টি বড় সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে সরকার।
প্রথম ধাপে নির্মাণের জন্য ১৫টি সেতু নির্বাচন করা হয়েছে। সেগুলোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সওজ সূত্র জানিয়েছে, সেতুর নির্মাণ ব্যয় এবং প্রকল্পের ভৌত কাজের উদ্বোধন নির্ভর করছে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও তহবিল ব্যবস্থাপনার উপর।
সওজ কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, ১৫টি সেতু নির্মাণে ৮ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হতে পারে। সময় মতো তহবিল সংগ্রহ করা গেলে ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে। বাকি ৩৫টি সেতুর নির্মাণ কাজ পরবর্তী ধাপে করা হবে।
বর্তমানে সওজ নেটওয়ার্কের অধীনে সারা দেশে ২২ হাজার ৪২৮ কিলোমিটার রাস্তা, ৪ হাজার ২৯৭টি সেতু এবং ১৫ হাজার ৪৮টি কালভার্ট অন্তর্ভুক্ত।
বড় সেতুগুলোর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। তবে ৫০০ মিটারের অধিক লম্বা সেতুকে সাধারণত বড় সেতু হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু ব্যবস্থাপনা শাখা) শিশির কান্তি রাউথ বলেছেন, সেতুগুলো নির্মাণ হলে ফেরিতে আর ভ্রমণ করতে হবে না। ফলে ভ্রমণের সময় এবং খরচ কমবে এবং নেটওয়ার্কের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া, ঢাকার সুলতানা কামাল সেতুর মতো বিদ্যমান সেতুগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে এগুলো নির্মাণ করা হবে।
প্রাথমিকভাবে, সওজ সারা দেশে নির্মাণের জন্য ৫৪টি সেতু নির্বাচন করে। পরে প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ১৫টি বেছে নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচিত ১৫টি সেতু হলো—ঢাকার শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দ্বিতীয় সুলতানা কামাল সেতু, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর উপর চন্দ্রঘোনা সেতু, খুলনার আতাই নদীর উপর আরুয়া সেতু, কক্সবাজারের বকখালী নদীর উপর খুরুসকুল সেতু, বরিশালের আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর মীরগঞ্জ সেতু, বরিশালে পোড়ার ধান নদীর উপর লক্ষ্মীপাশা সেতু, বরিশালে সন্ধ্যা নদীর উপর বানারীপাড়া সেতু, ময়মনসিংহে মহাদেব নদীর উপর মহাদেব সেতু, ময়মনসিংহে গণেশ্বরী নদীর উপর গণেশ্বরী সেতু, ময়মনসিংহের সোমেশ্বরী নদীর উপর সোমেশ্বরী সেতু-২ ও ৩, ময়মনসিংহের নিতাই নদীর উপর নিতাই সেতু এবং ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তিনটি সেতু।
সওজ সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের জুন মাসে রাজধানীর ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে দুই লেনের সেতুটি চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় এর পাশে আরেকটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিশির কান্তি রাউথ জানান, তারা ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, ধারণা এবং বিস্তারিত নকশা সম্পাদনের জন্য পরামর্শদাতা নিয়োগে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। আশা করা হচ্ছে, সম্ভাব্যতা সমীক্ষাটি আগামী বছরের প্রথম ভাগে শুরু হতে পারে এবং এটির জন্য ১৮ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তারপর দৃশ্যমান কাজ শুরু হবে।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সওজ ৯১৪টি সেতু এবং ৩ হাজার ৯৭৭টি কালভার্ট নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করেছে।
অনুবাদ করেছেন সুমন আলী
Comments