২০২১: নতুন ৫৫২ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের সন্ধান

সাড়ে ১২ কোটি বছর আগে পৃথিবীর বুকে ঘুরে বেড়াত ৯ মিটার লম্বা স্পিনোসর প্রজাতির এই ডাইনোসরগুলো। ছবি: রয়টার্স

চলমান বৈশ্বিক করোনা মহামারির মধ্যে বিজ্ঞানীরা ২০২১ সালে ৫৫২ প্রজাতির নতুন ও বিলুপ্ত প্রাণী এবং উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন।

লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে মিউজিয়ামটির গবেষকরা অনুসন্ধানের কাজ ঠিক মতো চালাতে পারেননি। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তারা ইংল্যান্ডের আইল অব উইগটে দুইটি স্পিনোসর প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন। এই প্রজাতির ডাইনোসর সাড়ে ১২ কোটি বছর আগে ওই অঞ্চলে বসবাস করত।

কুমিরের মতো মাথার খুলি সম্বলিত বিশালাকৃতির এই ডাইনোসরগুলো ভূমি ও সাগরে শিকার ধরত। যে দুইটি স্পিনোসর প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে তাদের একটি 'হেল হেরন' ও অপরটি 'রিভারব্যাঙ্ক হান্টার'।

ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বিজ্ঞপ্তিতে প্যালিওবায়োলজি বিভাগের গবেষক সুসানাহ মেইডমেন্ট বলেছেন, 'বছরটি বেশ চমৎকার কাটল। নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্ম মিলেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এসব নমুনা পর্যালোচনা করে জানা যাবে অতীতের ভূ-পরিবেশ কেমন ছিল এবং তা ধীরে ধীরে কীভাবে বদলে গেছে।'

২০২১ সালের পাওয়া অন্যান্য বিলুপ্ত প্রাণীর তালিকায় আছে মাকড়সা, তৃণভোজী কুমির ও জুরাসিক আমলের ইঁদুর। সাড়ে ১৬ কোটি বছরেরও বেশি আগে তারা এখনকার স্কটল্যান্ডে বিচরণ করত।

ছোট হলেও মহৎ প্রাণী

এক সময় পৃথিবীর বুকে বাস করত চিংড়ি জাতীয় জলজ প্রাণী 'কোপপোড'। সাধারণত এসব জলজ প্রাণী দেখা যেত পাহাড়ি হ্রদ ও মহাসাগরের খাড়িতে। গত বছর আবিষ্কৃত হয়েছে ২৯১টি নতুন প্রজাতির কোপপোড।

ছোট হলেও এ প্রজাতির জলজ প্রাণী এক সময় পৃথিবীর কার্বনচক্র ও বাস্তুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের লাইফ সায়েন্স বিভাগের গবেষক জিওফ বক্সশ্যাল এক বার্তায় গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'জলজ প্রাণী কোপপোডদের কোনো কোনো প্রজাতি পরজীবী ছিল।'

ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গত বছরের আবিষ্কারের দীর্ঘ তালিকায় আরও আছে পতঙ্গ, মথ, কাঁকড়া ও মাছি।

গবেষকরা ৯০টি প্রজাতির নতুন পতঙ্গ আবিষ্কার করেছেন। এর কোনোটির রঙ বেগুনি, কোনোটির সবুজ। এগুলো পাওয়া গেছে ভারতে। পাশাপাশি, বড় চোয়াল-বিশিষ্ট এক ধরনের পতঙ্গ পাওয়া গেছে ফিলিপাইনে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ঝোপঝাড়ে বাস করা এক ধরনের পতঙ্গের কথা বিজ্ঞানীরা জেনেছিলেন বেশ কয়েক দশক আগে। প্রায় ৩০ বছর আগে তারা এসব পোকার গানও শুনেছিলেন। কিন্তু, এ নিয়ে তাদের রহস্যের সমাধান পাচ্ছিলেন না। অবশেষে গেল বছর তাদের সেই রহস্যের অবসান হয়।

আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে পাওয়া গেছে পাঁচটি নতুন প্রজাতির গাছ। এ ধরনের গাছকে 'রত্নবিচি' বা 'আমাকে ছুঁয়ো না' বলেও ডাকা হয়। এসব গাছে সাধারণত গোলাপি, সাদা ও লাল ফুল ফোটে।

এ ছাড়াও, বিজ্ঞানীরা ১০টি নতুন প্রজাতির সরীসৃপ ও উভয়চর খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে আছে 'জোসেফস র‌্যাসার' নামের এক প্রজাতির সাপ। প্রায় ১৮৫ বছরের পুরনো এক চিত্রকর্ম এই সাপ খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করেছে।

সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনক যে সদ্য আবিষ্কৃত প্রাণীগুলোর বেশিরভাগই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে তাদের এক সময়ের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গেলে পৃথিবীতে টিকে থাকা অন্যান্য প্রাণীদের সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

6h ago