ঢাবিতে বান্ধবে’র প্রথম মিলনমেলা: বয়স ভুলে তারা যেন এখনো শিক্ষার্থী

বান্ধবের মিলনমেলায় ছবি তুলছেন ১৯৯৩-৯৪ সেশনের কয়েকজন শিক্ষার্থী। ছবি: সংগৃহীত

পুরোনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে কেউ ব্যস্ত কুশল বিনিময়ে, কেউ বা একে অন্যকে বুকে জড়িয়ে ধরছেন। কেউ খুলেছেন গল্পের ঝাঁপি। কেউ কেউ ব্যস্ত ছবি তুলতে। তারা যেন ফিরে গেছেন পুরোনো দিনে। বন্ধুদের এমন আবেগ, উচ্ছ্বাস বুঝিয়ে দিল বাঁধন আলগা হয়নি মোটেও, আছে প্রাণে প্রাণ মিলেমিশে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ১৯৯৩-৯৪ সেশনের বান্ধবের প্রথম পুনর্মিলনীর দৃশ্য ছিল এমনই। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজন করা হয় পুনর্মিলনী।

আর তাই তো এতদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আবেগ-উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসা বিনিময় করতে কর্মব্যস্ত জীবনে ছুটির দিনে বিশ্রাম না নিয়ে বন্ধুত্বের টানে ছুটে আসেন শত স্মৃতি বিজড়িত ক্যাম্পাসে। বয়স ভুলে সবাই চলে যান বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। নাচে গানে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন তারা।

সকাল পৌনে ১১টায় টিএসসি অডিটোরিয়ামে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে পুনর্মিলনীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

এ সময় সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ডিআইজি ক্যাম্পাসে আসার পর আর ডিআইজি থাকেন না, প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের সচিব আর সচিব থাকেন না অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর অধ্যাপক থাকেন না। তিনি নিজের সেই জীবনে (বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন) চলে যান। যতদিন এই মূল্যবোধগুলো থাকবে ততদিন মূলত মানবতার জয়গান উচ্ছ্বসিত হবে।'

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, 'বন্ধুত্বকে চির তরুণ করে রাখার জন্য এই ধরনের আয়োজন হয়। বন্ধুত্ব আমাদের নিজেদেরকে নিয়ে ভাবতে শেখায়, বাঁচতে শেখায়। বন্ধুত্বের বিকল্প শুধু বন্ধুত্বেই আছে। বন্ধুত্বকে রোমন্থন করার দরকার আছে। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটা জায়গা যেখানে শিক্ষাজীবন শেষ করার পর সব সময়ই মনে হয় আবার যদি ফিরে যেতে পারতাম আমাদের প্রাণের জায়গায়।

এ সময় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে বান্ধবের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে আশিক সাইফ বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে 'বান্ধব'র প্রথম পুনর্মিলনী করতে পেরে আমরা সত্যিই উচ্ছ্বসিত।'

মিলন মেলায় অংশ নিয়ে নিজের অনুভূতির প্রকাশ করেন ঢাকা আহসানিয়া মিশনের সিনিয়র সাইকোলজিস্ট রাখী গাঙ্গুলী৷ তিনি বলেন, 'আজ কত বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলো৷ অনেকের সঙ্গে প্রায় ২২ বছর পর দেখা হয়েছে৷ আজ যেন আমরা নিজেদের বয়সের কথা ভুলে গেছি৷ খুব ভালো লাগছে৷ এ ভালো লাগা একটি সুস্থ জীবনের জন্য খুবই প্রয়োজন৷'

অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'গত বছরের ৯ এপ্রিল এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে তা করা হয়নি। অত্যন্ত আনন্দিত অবশেষে আমর তা করতে পেরেছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Iran says it will not violate ceasefire deal unless Israel does

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago