ডলারের দাম পৌঁছালো ৮৬ টাকায়

আমদানি মূল্য বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট চাপ মোকাবিলার পাশাপাশি প্রবাসীদের উৎসাহ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মার্কিন ডলারের বিপরীতে বড় পরিসরে টাকার অবমূল্যায়ন করেছে।

আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে গতকাল রোববার প্রথমবারের মতো ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় মূল্য ৮৬ টাকায় পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় মূল্য ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি স্থানীয় মুদ্রার একটি বড় অবমূল্যায়ন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাধারণত একটি নির্দিষ্ট কর্মদিবসের জন্য প্রতি ডলারে ০.০৫ টাকা থেকে ০.১০ টাকার মধ্যে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন করে।

গত বছরের ১০ জানুয়ারি ডলারের বিপরীতে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা।

খোলাবাজারে এখন ডলার বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকার বেশি দরে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরের ভাষ্য, বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ভারসাম্য আনতে এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঠিক একটি সিদ্ধান্ত।

স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নে তিনি প্রতি ডলার কমপক্ষে ৮৮ টাকা নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ এটি। আমি আশা করি বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি আরও কয়েকটি ধাপে করবে।'

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বাজারের চাহিদা ও যোগানের ওপর ভিত্তি করে বিনিময় হার নির্ধারণ করার কথা। কিন্তু অর্থনীতির স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপ করে।

আমদানি বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে আসার পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্থানীয় মুদ্রা চাপের মুখে পড়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে টাকার অবমূল্যায়ন রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিতভাবে বাজারে ডলার ঢুকিয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমদানি বিল নিষ্পত্তি করতে চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন সমমূল্যের ডলার কিনেছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে।

জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে আমদানি মূল্য পরিশোধের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৫৪ শতাংশ বেশি।

এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২১ শতাংশ কমে ১০ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার ভাষ্য, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন ব্যবসায়ীদের বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করবে। একইসঙ্গে এই উদ্যোগ প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত অর্থ আনুষ্ঠানিক খাতের মাধ্যমে পাঠাতে উৎসাহিত করবে। এ ছাড়া এটি রপ্তানিকারকদেরও উৎসাহিত করবে বলে জানান তিনি।

৬ জানুয়ারি দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৪ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ৩০ জুন এর পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। আগস্টে যা রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

52m ago