‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে মঞ্চ নাটক অনেকদূর এগিয়েছে’

খ্যাতিমান অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ এ বছর অভিনয়ের ৫০ বছর পূর্ণ করলেন। গুণী এই শিল্পী ৬ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এবার পাচ্ছেন আজীবন সম্মাননা।
রাইসুল ইসলাম আসাদ। ছবি: স্টার

খ্যাতিমান অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ এ বছর অভিনয়ের ৫০ বছর পূর্ণ করলেন। গুণী এই শিল্পী ৬ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এবার পাচ্ছেন আজীবন সম্মাননা।

গত বছর একুশে পদক বিজয়ী রাইসুল ইসলাম আসাদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। আজীবন সম্মাননা পাওয়ার খবরটি শুনেছেন বোস্টনে বসে। দ্য ডেইলি স্টারকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন তার অনুভূতির কথা।

রাইসুল ইসলাম আসাদ। ছবি: স্টার

এ বছর আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন আপনি এবং খবরটি শুনেছেন দেশের বাইরে বসে।

৫০ বছর আগে অভিনয় শুরু করেছিলাম। বেতার, টেলিভিশন ও থিয়েটারে এ বছর অভিনয়ের ৫০ বছর পূর্ণ হলো আমার। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ৫০ বছর পূর্ণ হবে আগামী বছর।

কোনো কিছু পাওয়ার আশায় অভিনয়ে আসিনি। মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম দেশ পাব বলে, স্বাধীনতা পাব বলে। কিন্তু অভিনয়ে এসেছিলাম শুধুই ভালোবাসা থেকে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই তো সেদিন অভিনয়ে এলাম। কীভাবে ৫০টি বছর কেটে গেল টেরই পেলাম না।

এই সময়ে এসে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছি। ঘোষণা হয়ে গেছে। দেশের বাইরে থেকে সুসংবাদটি শুনেছি। আজীবন সম্মাননা পাওয়ার খবরটি শোনার পর মনে হয়েছে বয়স হয়ে গেছে। বোস্টনে স্ত্রী, সন্তানসহ খবরটি শোনার পর ভালো লাগা কাজ করছে।

পুরস্কার পাওয়ার জন্য কোনো শিল্পী কাজ করেন না। পুরস্কার একটি কাজের স্বীকৃতি। সেই স্বীকৃতি পেয়ে আমিও খুশি। বর্তমান সরকার এবং সরকার প্রধানের কাছে কৃতজ্ঞ আমি।

আমার এতদূর আসার পেছনে অনেকের অবদান আছে। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

আপনার পরিবার খুশির খবরটি কীভাবে নিয়েছে?

খুব ভালো ভাবে নিয়েছে। আমার স্ত্রী, আমার কন্যা দারুণ খুশি। ওদের সঙ্গে দূর প্রবাসে বসে খুশির সংবাদটি ভাগ করে নিয়েছি। দেশে থাকতে পারলে আরও ভালো লাগত। দেশে সব প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দ ভাগ করে নিতে পারতাম।

মজার ব্যাপার হচ্ছে গত বছর একুশে পদক পেয়েছি। এ বছর পেলাম আজীবন সম্মাননা। আমার জীবনে এটিও একটি বড় ঘটনা।

চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ আপনি দেখেছেন। সিনেমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কতটা আশাবাদী?

আমি কখনোই হতাশাবাদীদের দলে নই। দেখুন, আমাদের চলচ্চিত্রের বয়স কত? এমন তো নয় আমাদের চলচ্চিত্রের বয়স কয়েকশ বছর। স্বীকার করছি অনেক ভালো সময় পার করে এসেছি। অনেক ভালো সিনেমা একটা সময়ে নির্মাণ হয়েছে। আবার একটা সময়ে এসে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। হল সংখ্যা কমতে কমতে ভয়াবহ আকারে কমে যায়। তাই বলে হাহাকার করব কেন? হাহাকার করার মধ্যে আমি নেই। আমি আশাবাদী মানুষ। আশায় বুক বেঁধে থাকি, একদিন ভালো কিছু হবেই, সুদিন আসবেই।

তরুণ পরিচালকরা আসছেন। তারা নতুন ভাবনা নিয়ে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হচ্ছেন। অবশ্যই তরুণরা জয়ী হবেন।

মঞ্চ দিয়ে আপনার অভিনয় জীবন শুরু। স্বাধীনতার ৫০ বছরে মঞ্চ নাটক কতটা এগিয়েছে?

দেশ স্বাধীনের পর যখন মঞ্চ নাটক শুরু হয়েছিল, সেই সময়ে অল্প কয়েকটি দল ছিল। এখন অনেক নাটকের দল, অনেক নাটক হচ্ছে। শুধু যে ভালো নাটক হচ্ছে তা বলব না। আবার শুধু যে খারাপ নাটক হচ্ছে তাও না। সবখানে ভালো আর মন্দের বসবাস।

তারপরও বলতে চাই, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের মঞ্চ নাটক অনেকদূর এগিয়েছে।

এক সময় প্রচলিত ছিল, কোনো দেশের থিয়েটার কতটা উন্নত তার ওপর নির্ভর করে সে দেশের সংস্কৃতি কতটা উন্নত। সেই দিক থেকে বলব, থিয়েটারে আমরা অনেক অগ্রসর হয়েছি। এটা থিয়েটারের প্রতি আমাদের ভালোবাসার জন্য হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Bank again dissolves National Bank board

The bank’s sponsor director Khalilur Rahman made the new chairman

1h ago