মুখে সিগারেট ও নাক-মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে না পারায় পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের ২০১৮-১৯ সেশনের ৪ জন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে নির্যাতনের ঘটনায় ওই ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু তালিব।

অভিযুক্তরা হলেন- সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থগার বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম ফাগুন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাতে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু তালিবকে গেস্টরুমে ডেকে নেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। জোর করে সিগারেট জ্বালিয়ে তার মুখে দেয় তারা। সিগারেটটি হাত দিয়ে না ধরে এবং ধোঁয়া মুখ দিয়ে না ছেড়ে শেষ করতে বলে তাকে। এ সময় তার হাত পিছনের দিকে রাখতে বাধ্য করা হয়। জ্বলন্ত সিগারেটের ধোঁয়া নাক দিয়ে বের করতেও জোর করা হয়। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী কাঁদতে শুরু করলে তাকে গালিগালাজ করেন তারা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু তালিব বলেন, 'পরে তারা একাধিকবার আমাকে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করেছে। নির্যাতনের শিকার হয়ে আমি রাতে হল থেকে বের হয়ে যাই। রাত ৩টার দিকে হলে ফিরে ভয় ও আতঙ্কে ভোরেই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাই।' 

এই ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কর্তৃপক্ষকে ইমেইলে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত। সে ছাত্রলীগের অধীনে হলে থাকে। তাই আমরা তাকে বুঝিয়েছি।'

আরেক অভিযুক্ত শেখ শান্ত আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। আমরা শুধু জুনিয়র শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি।'

অভিযুক্ত ৪ জনই হল ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান শান্তের অনুসারী এবং শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী। এ বিষয়ে জানতে সনজিত চন্দ্র দাসকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের কিছু ঘটে থাকলে তা অনাকাঙ্খিত। আমরা নেতাকর্মীদের এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে কোনো নিদের্শনা দেইনি। হল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো, তারা যেন বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেন।'

অভিযোগের প্রসঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. আকরাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
How do we avoid a debt trap?

How do we avoid a debt trap?

The debt bubble is ominous, given Bangladesh’s narrow export base and heavy reliance on remittance inflows.

6h ago