রাতে আল্টিমেটাম, সকালে শিক্ষার্থীকে বের করে দিলেন হল ছাত্রলীগ সভাপতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তার রুম থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে।
আকিবের বিছানাসহ সব জিনিসপত্র হলের রুমের বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তার রুম থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম আকিব জাভেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। শের-ই-বাংলা হলের ১২৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী তিনি।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রাতুল ওই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাতুলের নেতৃত্বে ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল রাত ১২টার দিকে তাকে সিট ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল বলেও জানা যায়।

ভুক্তভোগী আকিব জাভেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গত মার্চ থেকে হলের ১২৯ নম্বর রুমে বিছানা ভাগাভাগি করে থাকতাম। হলে ওঠার পরপরই ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা আমাকে বলেন, আমি যেন ওই রুম ছেড়ে দেই, কোনো বেডে যেন না উঠি।'

'এরপর গত ৮ এপ্রিল রুমে একটা বেড ফাঁকা হলে সেই বেডে উঠি। এরপরই গতকাল রাত ১২টায় রাতুলের নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮ জন ছাত্রলীগ নেতা রুমে এসে সকালের মধ্যে আমাকে হল ছাড়তে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া নির্দেশ না মানলে বিপদে পড়তে হবে বলেও আমাকে হুমকি দেওয়া হয়।'

'আমি সকালের মধ্যে হল না ছাড়ায় তারা সকাল সাড়ে ৯টায় আবারও আসে। এসে আমার বিছানাসহ সব জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেয়,' বলেন আকিব।

আকিব জানান, তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি ৪ ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়। ৫ মাস আগেই তারা বাবা মারা যান। অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে তিনি এর আগে হলে বন্ধুদের সঙ্গে বিছানা শেয়ার করে থাকতেন।

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'আকিব অন্য এক রুমে বেড শেয়ার করে থাকতেন। ১২৯ নম্বর রুমে একটি সিট খালি হওয়ার পর আকিব সেই সিটে উঠে পড়েন। অথচ জেষ্ঠতার ভিত্তিতে ওই সিটে অন্য এক শিক্ষার্থীর ওঠার কথা ছিল। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে আসেন, হল প্রাধ্যক্ষের কাছে যান। আমরাও হলে তুলে দেই। এ ক্ষেত্রেও আমরা শুধুমাত্র সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমি কাউকে হল থেকে বের করে দেইনি।'

তার জিনিসপত্র বের করে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমি তার জিনিসপত্র বের করে দেইনি। তবে জৈষ্ঠ যে শিক্ষার্থী পরবর্তীতে ওই সিটে উঠেছেন, তিনি বের করে রাখতে পারেন।'

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মো. হবিবুর রহমান বলেন, 'ওই শিক্ষার্থী যে হলে অবস্থান করছেন তা অফিসিয়ালি প্রশাসনকে অবগতই করেননি। অবগত করলে হয়তো শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটতো না। এ ছাড়া আজ সকালে বিষয়টি জানার পর আমি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। সব শুনে আপাতত ওই শিক্ষার্থীকে অন্য একটি রুমে থাকার ব্যবস্থা করেছি।'

'তাছাড়া একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে রুম থেকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার কেউ রাখে না। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি,' বলে যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Exports fall in April

Exports fall in April

It declined 0.99% year-on-year to $3.91 billion in April

46m ago