রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সমঝোতায় আসা উচিত: নোয়াম চমস্কি

নোয়াম চমস্কি। ছবি: রয়টার্স

পরমাণুযুদ্ধের 'ক্রসফায়ারে' পড়ে 'নিশ্চিহ্ন' হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে ইউক্রেনে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পরও আক্রান্ত দেশটিকেই রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় আসা উচিত বলে মনে করেন বিশ্বখ্যাত দার্শনিক ও ভাষাতত্ত্ববিদ অধ্যাপক নোয়াম চমস্কি।

আজ সোমবার জেরুজালেম পোস্ট এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৩ এপ্রিল কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক চমস্কি বলেন, 'সবাইকে বৈশ্বিক বাস্তবতার দিকে নজর দিতে হবে।'

তিনি মনে করেন, রাশিয়ার দাবির প্রতি ইউক্রেনকে অবশ্যই নমনীয় মনোভাব দেখাতে হবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক চমস্কি বলেন, 'আমরা এখন যে নীতি মেনে চলছি তা হলো, শেষ ইউক্রেনীয় বেঁচে থাকা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। এই নীতি মেনে চললে পরমাণুযুদ্ধের আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া, আরেকটি বিকল্প হচ্ছে কূটনৈতিক সমাধান। এ সমাধান সবার জন্য সুখকর কিছু হবে না। কারণ এটি মূলত পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠদের জন্য এই যুদ্ধ থেকে পালানোর পথ তৈরি করে দেবে।

'আমরা জানি মূল বিষয়টি হচ্ছে ইউক্রেনের "নিরপেক্ষ অবস্থান" নিশ্চিত করা। সঙ্গে দনবাস অঞ্চলের বাস্তবতা, অর্থাৎ ইউক্রেনের ফেডারেল কাঠামোর মধ্যে থেকেই সে অঞ্চলে ব্যাপক পরিসরে স্বায়ত্তশাসনের প্রতিষ্ঠা এবং আমরা মানি বা না মানি, এটা বুঝে নিতে হবে যে, ক্রিমিয়া নিয়ে কোনো ধরনের দাবিদাওয়া আলোচনার টেবিলে নেই।'

চমস্কি আরও বলেন, 'এই বাস্তবতা আপনারা নাও মানতে পারেন। ধরুন আমরা জানতে পারলাম যে, আগামীকাল একটি ঘূর্ণিঝড় হবে। এখন "ঘূর্ণিঝড় পছন্দ করি না" বা "ঘূর্ণিঝড়ের অস্তিত্ব মানি না"—এসব কথা বলে তো আপনি ঝড় থামাতে পারবেন না।'

'ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সমালোচনা করবো না' উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক চমস্কি আরও বলেন, 'জেলেনস্কি বেশ সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তার জায়গা থেকে তাকে দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন বা তার প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি হবে।'

'পেন্টাগনও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদেরও যুদ্ধে যোগ দেওয়া সুযোগ আছে। জেলেনস্কিকে যুদ্ধবিমান ও অত্যাধুনিক অস্ত্র দেওয়া যেতে পারে। এমনটি হলে পুতিনও ইউক্রেনে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। ইউক্রেনকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ক্ষমতা রাশিয়ার আছে। অস্ত্র সরবরাহের পথেও হামলা চালানোর সক্ষমতাও তাদের আছে। এভাবে আমরা জটিল এক যুদ্ধে জড়িয়ে যাব। পরমাণুযুদ্ধের ক্রসফায়ারে পড়ে আমরা সবাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব।'

'তাই আমি জেলেনস্কির সমালোচনা করছি না। তিনি সম্মানিত মানুষ। তিনি অনেক সাহস দেখিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তার প্রতি সহানুভূতি দেখানো যেতেই পারে। কিন্তু, সবাইকে বৈশ্বিক বাস্তবতার দিকেও নজর দিতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Why are we trying to make the election uncertain?

Those who are working to prevent the election should question themselves as to how the people will be empowered without one.

3h ago