রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শিলাইদহে ৩ দিনের কর্মসূচি শুরু

কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিন দিনের অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করেন স্পিকার শিরিন শারমিন। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তীর জাতীয় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। স্পিকার শিরিন শারমিন আজ রোববার তিন দিনের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার শিরিন শারমিন বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সাহিত্যে সত্য ও সুন্দরের দর্শন চর্চা করেছেন। তার রচিত 'আমার সোনার বাংলা' গানটি এই সত্য ও সুন্দরের প্রতিচ্ছবি; এটা বাংলাদেশেরই প্রতিচ্ছবি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালেদ।

স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গঠনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সত্য-সুন্দরের দর্শনের মিল রয়েছে।

তিনি তরুণ প্রজন্মকে রবীন্দ্রনাথের সত্য-সুন্দরের দর্শনকে ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর, স্মারক বক্তৃতা করেন অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা।

দুই বছরের অনির্ধারিত ও দুই বছর করোনার কারণে বন্ধ থাকার পর এবার কুঠিবাড়িতে তিন দিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে আলোচনাসভা ছাড়াও রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান, নাটক নিয়ে বেশ কিছু আয়োজন থাকছে। প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে স্বনামধন্য শিল্পীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন।

বিশ্বকবির স্মৃতিধন্য এই কুঠিবাড়িতে ঈদ পরবর্তী এই তিন দিনের উৎসব ইতোমধ্যে রবীন্দ্রপ্রেমীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে। ভারত সরকারের অর্থায়নে সদ্য নির্মিত দুটি দৃষ্টিনন্দন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কুঠিবাড়ি এলাকায় এই দুই ভবনে রয়েছে একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার, একটি গ্রন্থাগার, একটি সংগ্রহশালা, পর্যটকদের জন্য একটি ৪০ কক্ষের থাকার ব্যবস্থা এবং একটি দ্বিতল ক্যাফেটেরিয়া।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নে অবস্থিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক বাড়িটিই রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি বা শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি নামে পরিচিত। কুষ্টিয়া শহর থেকে এর দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। সমগ্র কুঠিবাড়ি এলাকা প্রায় ৩৩ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যে কুঠিবাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় আড়াই বিঘা জমির উপর। ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে ১৮৬২ সালে নির্মিত এই বাড়িটির নিচতলায় ৯টি, দোতলায় ৭টি, তিনতলায় ২টি কক্ষসহ মোট ১৮টি কক্ষে ৮৩টি জানালা ও ১৮টি দরজা রয়েছে। কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত আসবাবপত্র আছে। আছে সেই সময়ের দুর্লভ ছবি, পালকি, পালঙ্ক। রয়েছে একটি পুকুর, কবি যে পুকুরপাড়ে বসে কবিতা লিখতেন, সেখানে আছে সেই সময়ের লাগানো বকুলগাছ। এ পুকুরেই রয়েছে রবিঠাকুর যে নৌকায় চড়ে পদ্মায় ঘুরতেন, সেই নৌকার একটি রেপ্লিকা।

১৮০৭ সালে রবীন্দ্রনাথের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর এ অঞ্চলের জমিদারী লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৮৮৯ থেকে ১৯১৬ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ অনিয়মিত বিরতিতে এই বাড়িতে আসতেন। কখনো একা, কখনো পরিবার নিয়ে এসে জমিদারীর কাজ পরিচালনা করতেন।

এই বাড়িতেই রবীন্দ্রনাথ 'গীতাঞ্জলি'র একটি বড় অংশসহ বহু কালজয়ী লেখা লিখেছিলেন। বাড়িটি ১৯৬১ সাল থেকে সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের অধীনে সংরক্ষিত।

Comments

The Daily Star  | English

Aid allocation to be trimmed in next budget

The plan comes as $42.85b foreign funds remained unused at start of current FY

14h ago