ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা: ১০ দিনেও থানায় পৌঁছায়নি কাগজ

গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে খেয়াঘাট ইজারা দেওয়া নিয়ে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ১০ দিনেও এ সংক্রান্ত কাগজ থানায় পৌঁছায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম।

এদিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মো. রিয়াজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল পটুয়াখালীর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বড়গাবুয়া এলাকার গোলখালী নদীর খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে দুর্নীতির মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দেয়।

তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুদকের পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাজমুল হুসাইন গত ৮ মার্চ আদালতে চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনসহ ২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত ১২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোলাখালী ইউনিয়নের বড়গাবুয়া একটি আন্তঃজেলা খেয়াঘাট। এর পূর্বপাড়ে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা ও পশ্চিমপাড়ে বরগুনার আমতলী।

বড়গাবুয়া খেয়াঘাটটির ইজারা দেওয়ার এখতিয়ার বিভাগীয় কমিশনারের। সে অনুসারে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মামলার বাদী রিয়াজ মিয়াকে সালে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ঘাটটি ইজারা দেয় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়।

কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান নাসির ইজারাদার রিয়াজকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে খেয়াঘাট পরিচালনায় বাধা দেন। তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে চাঁদার টাকা না পেয়ে খলিলুর রহমান নামের আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নিয়ে তিনি ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল বড়গাবুয়া খেয়াঘাটের অদূরে আরেকটি খেয়াঘাট নির্মাণ করেন।

সশ্লিষ্টদের ভাষ্য, সরকারের ইজারা দেওয়া খেয়াঘাটের ২ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন কোনো খেয়াঘাট তৈরি ও ইজারা দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান নাসির ওই নিয়ম লঙ্ঘন করে নতুন ঘাটের ইজারাও দেন।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে গলাচিপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিষ কুমার বলেন, 'আমরা এখনো এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র পাইনি। কাগজ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কাগজপত্র পুলিশ সুপারের অফিস হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়ে থাকে। তবে এখনো তা কেন থানায় পৌঁছায়নি সে ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt to unveil 'July Declaration' on August 5

It will be presented in presence of all stakeholders involved in the mass uprising at 5:00pm

2h ago