কুড়িগ্রাম

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কার্ড আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাছেন আলীর বিরুদ্ধে। 

জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে ৬৬২ জন ভিডব্লিউবি কার্ডের সুবিধাভোগী রয়েছেন। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতিমাসে তারা ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। 

হতদরিদ্রদের নামের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাচাই বাছাইয়ের পর গত জানুয়ারিতে মহিলা অধিদপ্তরে পাঠান। ওয়েবসাইটে তাদের নামের তালিকা থাকলেও ভুক্তভোগী ২০ জন বলছেন তারা কোনো চাল পাননি, গত ৮ মাসে। 

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ৪ হাজার ৯০০টি ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে বরাদ্দ কার্ডের সংখ্যা ৬৬২টি। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এসব সুবিধাভোগীরা পুষ্টি চাল পাচ্ছেন। তারা মোট ২৪ মাস এ সুবিধা পাবেন।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গজেরকুটি গ্রামের মিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি ভিডব্লিউবি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনেছেন তার নামে কার্ড হয়নি। ছয় মাস পর তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মচারীর মাধ্যমে তালিকায় নিজের কার্ডের বিষয়ে জানতে পারেন।

তিনি জানান, কার্ডটি পেতে কয়েকবার চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলেন কিন্তু পাননি। চেয়ারম্যান তার কার্ডটি আত্মসাত করেছেন।

মিনা বেগম বলেন, 'আমি হতদরিদ্র মানুষ। কার্ডটি আমার খুবই দরকার। এ কার্ড দিয়ে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পাওয়া যাচ্ছে।'

কার্ডটি ফেরত পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছেন বলেও জানান তিনি।

তবে ভিডব্লিউবি কার্ড আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাছেন আলী। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ইউনিয়নে ২০ জন ভিডব্লিউবি কার্ডের সুবিধাভোগী সচ্ছল এবং তারা সরকারের অন্যান্য সুবিধা ভোগ করায় তাদের নাম বাতিল করা হয়েছে। এসব কার্ড ২০ জন হতদরিদ্র নারীকে বিতরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি রেজুলেশন করে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।'

হতদরিদ্র নয় বলে তাদের কার্ড দেওয়া হয়নি। তাহলে কীভাবে তাদের নাম হতদরিদ্র নামের তালিকায় পাঠিয়েছিলেন, জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সে সময় আমি অসুস্থ ছিলাম, কীভাবে তাদের নাম চলে গেছে জানি না।'

যাদের নাম তালিকায় আছে তাদের বাদ দিয়ে ২০ জন হতদরিদ্র নারীকে তিনি ওই চাল দিয়েছেন বলে দাবি করলেও তাদের কোনো পরিচয় বা তালিকা তিনি দেননি। 

ফুলবাড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলি আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউপি চেয়ারম্যান ২০ জন সুবিধাভোগীর নাম বাতিলের জন্য পত্র দিলেও কী কারণে তাদের বাতিল করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। এ কারণে চেয়ারম্যানের পত্রটি গৃহিত হয়নি। এটা ওই চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাম বাতিল না হওয়ায় তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের নাম এখনো ওয়েবসাইটে রয়েছে।'

'২০ জন সুবিধাভোগীর নাম কেন বাতিল করা হয়েছে চেয়ারম্যান তার কোনো কারণ জানাতে পারেনি, তাই আগের তালিকাই বহাল আছে।'

তিনি আরও বলেন, 'ভিডব্লিউবি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি হলেন ইউএনও স্যার। তিনি বিষয়টি জেনেছেন এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ কবেন।'

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ভিডব্লিউবি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সিব্বির আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি সুবিধভোগীদের নিয়ে জটিলতা দ্রুত সমাধান করা হবে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago