বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করায় ‘শাপে বর’ হয়েছে: আইনমন্ত্রী
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য 'শাপে বর' হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সম্পাদিত 'আমাদের অর্থে আমাদের পদ্মা সেতু' বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, 'নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কারণে আজকে আমাদের আত্মমর্যাদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের নিজের ওপরে বিশ্বাস আরও সুদৃঢ় হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'আজকে আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই কথা "আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না" সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। বাঙালিকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।'
মন্ত্রী বলেন, 'আমরা যদি বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে পদ্মা সেতু না করতাম বা আমাদের নিজেদের অর্থায়নে আজকে পদ্মা সেতু না করতাম তাহলে কিন্তু অন্যরকম হতো। হয়ত কোনো এক সময় পদ্মা সেতু হতো, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগটা হতো, কিন্তু আজকে যে মর্যাদা পেয়েছি সেটা পেতাম না।'
আনিসুল হক বলেন, 'বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলো, তখন অনেকেই আশঙ্কায় ছিলেন যে এটা বোধ হয় আর হবে না। তবে সেই সেতু তৈরি সম্ভব হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাংক মনে করেছিল তাদের অর্থায়ন ছাড়া বাঙালিরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না। তারা পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করার পর অনেকেই বলেছিলেন যে এই সেতু করা যাবে না বা বাংলাদেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করাটা হাস্যকর হবে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন দৃঢ় চিত্তে বলেছিলেন, আমাদের অর্থে আমরা পদ্মা সেতু করব। তার এই দৃঢ় চিত্ত মনোভাব বাঙালির মধ্যে নতুন করে স্পৃহা জাগায়।'
'বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত করতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছিলাম, এটা আপনারা করতে পারবেন না। আমাদের আইন অনুযায়ী আমরা তদন্ত করব। পরে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করে। কানাডার আদালতও পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি,' যোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. শামসুল হক, বইয়ের প্রকাশক ও চন্দ্রাবতী একাডেমির সত্ত্বাধিকারী কামরুজ্জামান খন্দকার কাজল বক্তৃতা করেন।
Comments