বিদেশ ভ্রমণ বাড়ায় মে মাসে কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন সর্বোচ্চ ৩৫৬ কোটি

বিদেশে ভ্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত মে মাসে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি টাকা, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিদেশে ভ্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত মে মাসে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি টাকা, যা এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আগের বছরের মে মাসের তুলনায় কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ২৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে মতে, ২০২২ সালের এপ্রিলে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪১ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, কার্ডের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ অর্থের লেনদেন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চলমান চাপকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মো. মহিউল ইসলাম বলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে মে মাসে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে ফ্লাইটের ভাড়াও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভ্রমণকারীরা অনেক কেনাকাটাও করেছেন, ফলে গ্রিনব্যাকের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অনেক মানুষ বিদেশে ভ্রমণ করতে পারেননি। যে কারণে মে মাসে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মহিউল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলেও কার্ডের মাধ্যমে ব্যয় এখনো কমেনি।

তবে আগামী দিনে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন কমতে পারে বলে জানান তিনি।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমানও একই কথা বলেন।

তিনি বলেন, মে মাসে অনেকে চিকিৎসা নিতে বিদেশে গিয়েছিলেন। ফলে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনও বেড়েছে।

ঢাকা ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান এইচএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নেওয়ায় সম্প্রতি বিদেশগামী মানুষের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।

ডলারের ব্যয় কমাতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি কর্মীদের বিদেশ ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, আমদানিতে বাড়তি ব্যয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন চাপের মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, কার্ডের মাধ্যমে ব্যয় বৃদ্ধিও চলমান চাপ বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।

২০২২ সালে আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৮২ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি। যেখানে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ১৫ শতাংশ কমে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

এই পরিস্থিতিতে ৩ আগস্ট পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া, আন্তঃব্যাংক প্লাটফর্মে টাকার বিনিময় হার ৮ আগস্ট প্রতি ডলারের দাঁড়িয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। যা এক বছর আগে ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা।

Comments