স্কুলের পাশে অটো রাইস মিলের অনুমোদন পরিবেশ অধিদপ্তরের

স্কুলের পাশেই নির্মাণ কাজ চলছে অটো রাইস মিলের। ছবি: স্টার

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আঠারোদানা এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে অটো রাইস মিল নির্মাণ করা হচ্ছে।

গ্রামের মানুষের অভিযোগ, অটো রাইস মিলটি চালু হলে এলাকার পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।

স্কুলের পাশে অটো রাইস মিলটির নির্মাণ বন্ধে ইতোমধ্যে স্থানীয়রা বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন।

তবে, স্থানীয় প্রশাসন অটো রাইস মিলটির নির্মাণ বন্ধ করতে পারেনি। কেননা, মিলটির মালিকপক্ষ ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বছরের অক্টোবরে আঠারোদানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাত্র কয়েকশ ফুট দূরে ধলেশ্বরী এগ্রো ফুড মিলস নামে প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ ব্যাপারে তারা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি।

আনোয়ারুল কবীর ও আজমত আলীসহ বিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, মিলটি সেখানে নির্মিত হলে ব্যাহত হবে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম।

আনোয়ারুল কবীর বলেন, 'মিলটি শেষ পর্যন্ত ওখানে নির্মিত হলে আমি আমার ছেলেকে ওই বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও ভর্তি করব।'

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলম বলেন, 'মিলটি ওই স্থানে নির্মাণে আমরা আপত্তি জানালেও মিলের মালিকপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি।'

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নির্মাণাধীন অটো রাইস মিলটির মালিকদের একজন আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিলটির নির্মাণ কাজ শুরুর আগে আমরা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম, এ ব্যাপারে কারো কোনো আপত্তি আছে কি না। কেউ সেই সময়ে কোনো আপত্তি তোলেননি। পরে মিলটি নির্মাণের ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের অনুমোদন দিয়েছে।'

মিল নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, 'মিলটির অবস্থান বিদ্যালয়টি থেকে যথেষ্ট দূরে এবং আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নির্মিত স্বয়ংক্রিয় মিলটি এলাকার পরিবেশ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যে আদৌ কোনো ক্ষতি করবে না।'

'ওই এলাকায় খানিকটা দূরে একই ধরণের আরও একটি মিলের নির্মাণ কাজ চলছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের মিলটির নির্মাণ বন্ধের জন্য স্থানীয়দের উস্কানি দিচ্ছেন,' যোগ করেন তিনি।

ঘটাইলের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ ব্যাপারে কয়েকবার তদন্ত করা হলেও মিল নির্মাণের কাজটি চলছে।

ঘাটাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিয়া চৌধুরী জানান, মিলটি নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তর অনুমোদন দিয়েছে।

টাঙ্গাইলের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়।'

পরিবেশ অধিদপ্তরের (ঢাকা অঞ্চল) পরিচালক মো. জিয়াউল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এ বিষয়ে ৩ বার শুনানি করেছি। শুনানিতে মিলের মালিকপক্ষ উপস্থিত থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ আসেননি। এরপর মিলটি সেখানে নির্মাণে অনুমতি দেওয়া হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'তবে এসব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ আছে। আমরা আবার বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।'

Comments

The Daily Star  | English

India imposes immediate ban on jute product imports from Bangladesh via land ports

The goods are bleached and unbleached woven fabrics of jute or other bast fibre, twine, cordage and cables of jute besides sacks and bags of jute

2h ago