‘৩০০ টাকা মজুরি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে’

ধর্মঘট পালন করছেন চা-শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন চা-বাগানের শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে আজ শনিবার থেকে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারা দেশের ১৬৬ চা-বাগানে ধর্মঘট শুরু হয়।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, চা-শ্রমিকরা মৌলভীবাজার-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করেছেন।

কুলাউড়া সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হাসান সিপন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মৌলভীবাজার-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন জায়গায় চা-শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। ফলে লুহাউনি ও ব্রাক্ষণবাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে।'

যানজট বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালেক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছু স্থানে সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে চা-শ্রমিকদের বুঝিয়েছি। সেখানে তারা সড়ক অবরোধ না করেই তাদের কর্মসূচি পালন করছেন। আরও কিছু স্থানে সড়ক অবরোধের খবর পেয়েছি। আমরা সেখানেও যাব।'

এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন শ্রমিকেরা। তবে, দাবি মেনে না নেওয়ায় গতকাল শুক্রবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় চা-শ্রমিক ইউনিয়ন।

ধর্মঘট পালন করছেন চা-শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

আজ সকালে মৌলভীবাজার লোহায়ওনি চা-বাগানে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে। কর্মসূচিতে আসা নারী চা-শ্রমিক সবিতা গড়াইত বলেন, 'আমাদের দুঃখ কেউ বোঝে না। আমরা ৪ দিন কর্মবিরতি করেছি। কিন্তু কেউ আমাদের এসে আশ্বাস দিলো না। আমরা এত কষ্ট করে কাজ করি, কিন্তু আমাদের ন্যায্য মজুরি দেওয়া হয় না। চাল, ডাল, তেল— সবকিছুর দাম বেড়েছে। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ আছে। অসুখ হলে চিকিৎসা করাতে হয়। এর মধ্যে প্রতিদিনই জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ছে না।'

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলছে। দেশের ১৬৬ চা-বাগানে এ ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। ৩০০ টাকা মজুরি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে। দেশের বিভিন্ন বাগানের চা-শ্রমিকেরা একত্রিত হয়েছেন। বাগানে বাগানে সমাবেশ হবে।'

এ বিষয়ে বাংলাদেশি চা-সংসদের সিলেট বিভাগের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা চলাকালে এভাবে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করা বেআইনি। এখন চা-বাগানে ভরা মৌসুম। কাজ বন্ধ রাখলে সবার ক্ষতি। তারাও এই মৌসুমে কাজ করে বাড়তি টাকা পায়।'

মালিকপক্ষের সঙ্গে চা-শ্রমিকদের আলোচনা প্রায় ১৯ মাস ধরে চলছে। কিন্তু, শ্রমিকদের নতুন কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না, জানতে চাইলে গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, 'আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি যাতে তাদের কাজে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।'

বাংলাদেশ টি-বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ১৬৬টি চা-বাগান রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

7h ago