‘বেঁচে থাকতেই খবর নিতো না, এখন তো মানুষটা বেঁচে নেই’

এ টি এম শামসুজ্জামান। ছবি: স্টার

বাংলা সিনেমার কিংবদিন্ত অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। আজ এই বরেণ্য অভিনয়শিল্পীর ৮২তম জন্মদিন।

১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর 'বিষকন্যা' সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছিলেন 'জলছবি' সিনেমার জন্য। ২০০৯ সালে প্রথম পরিচালনা করেন 'এবাদত' সিনেমা।

তিনি ছিলেন একাধারে একজন কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক। তবে, সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছেন অভিনেতা হিসেবে।

এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিডিয়ার কেউ তেমন আর আমাদের খবর রাখে না। বেঁচে থাকতেই খবর নিতো না এখন তো মানুষটা আর বেঁচে নেই। তাদের কাছে প্রত্যাশা করাটাও বোকামি। মানুষ সামনে থাকলে কথা বলে আড়ালে গেলে সব ভুলে যায়।'

তিনি আরও বলেন, 'এফডিসির কেউ ফোন করে খবর রাখে না। নাটক সিনেমার জন্য সব দিয়ে গেলেন অথচ তার মৃত্যুর পর কেউ খোঁজ রাখে না, এটাই বাস্তবতা। আমাদের খবর তো দূরের কথা এটিএম শামসুজ্জামানের কবরটাও কোনোদিন কেউ দেখতে আসে না। তবে সাধারণ মানুষ মনে রেখেছে তাকে। এটা আমার জন্য অনেক পাওয়া।'

১৯৬৫ সালে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন এই অভিনেতা। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা 'ন্যায়ী জিন্দেগি'। সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। ১৯৭৪ সালে তিনি আমজাদ হোসেন পরিচালিত 'নয়নমনি' সিনেমায় খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন।

তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে- অবুঝ মন, দায়ী কে, অবুঝ বউ, মলুয়া, ওরা ১১ জন, লাঠিয়াল, সংগ্রাম, গোলাপি এখন ট্রেনে, সূর্য দীঘল বাড়ি, অশিক্ষিত, রামের সুমতি, ছুটির ঘণ্টা ইত্যাদি।

১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত 'দায়ী কে' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০১২ সালে রেদওয়ান রনি পরিচালিত 'চোরাবালি' ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের জন্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এটিএম শামসুজ্জামান। ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন এই অভিনেতা। ৫ বার তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া, শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন প্রবীণ এই অভিনেতা।

Comments