সীমান্তে গোলাবর্ষণ: নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রোহিঙ্গারা

গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোড়া এই মর্টার শেল বাংলাদেশের আধা কিলোমিটার ভেতরে এসে পড়ে। ছবি: জেলা পুলিশের সৌজন্যে

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তামব্রু সীমান্তে গোলাবর্ষণ এবং মর্টার শেল নিক্ষেপে হতাহতের ঘটনায়ে আশ্রয় ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

শুক্রবার রাতে ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কোনারপাড়া এলাকায় শূন্য রেখায় থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েকটি মর্টার শেল বিস্ফোরণ হয়। এতে এক যুবকের নিহত ও আরও ৪ রোহিঙ্গা আহত হন।

প্রশাসন বলছে, মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার-শেল এবার বাংলাদেশ সীমান্তের ৩০০ গজ ভিতরে এসে পড়েছে। ফলে, সেখানকার স্থানীয়দের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভেজ তীবরীজি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শূন্য রেখায় ৩টির মতো গোলা এসে পড়লে একটি বিস্ফোরিত হয়। যারা হতাহত হয়েছেন তারা সবাই রোহিঙ্গা। ঘটনার পর শূন্য রেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই, তবে যারা আছেন তাদের অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।'

'বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে নতুন করে কেউ যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এজন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে,' যোগ করেন তিনি।

তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্য রেখায় ৫ বছর ধরে আশ্রয় ক্যাম্প গড়ে তুলে বসবাস করছেন মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয় ক্যাম্প ঘেঁষে (পেছনে) মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ও রাখাইন রাজ্যের একাধিক পাহাড়।

এর আগে, গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া ২টি মর্টার শেল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তামব্রু সীমান্তের উত্তরপাড়া মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এসে পড়ে। পরদিন সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল সেটি নিষ্ক্রিয় করে। তার ঠিক ২দিন পর ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে গোলা এসে পড়ে।

এদিকে শুক্রবারের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় সীমান্তবর্তী ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকা পরীক্ষা কেন্দ্রটি সরিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন।

ওই কেন্দ্রের ৪৯৯ জন পরীক্ষার্থীদের শনিবার সকালের পরীক্ষা নতুন কেন্দ্রে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

মো আশরাফ উদ্দিন বলেন, 'এবারের মর্টার শেল ৩০০ গজ ভেতরে এসে পড়েছে। আমাদের চিন্তা শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে। আমরা তাদের পার্শ্ববর্তী নতুন কেন্দ্র নিয়ে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে রাতে মাইকিং করা হয়েছে। বাজার-ঘাট থেকে শুরু করে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আমরা মাইকিং করেছি। ভোর থেকে আবার মাইকিং শুরু হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আগের কেন্দ্রে যদি কোনো পরীক্ষার্থী চলে আসে, তাদের সেখান থেকে শিফট করা হবে। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবহন প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে কেউ শিফটিংয়ের সময় কোনো সমস্যার মুখে না পড়ে।'

বান্দরবান জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভেজ তীবরীজি বলেন, 'কুতুপালং, বালুখালী, উখিয়া এবং ঘুমধুম এই ৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষা চলছে। এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই পরীক্ষার্থী হলো উখিয়ার বাকিরা ঘুমধুমের। তারা যেন নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পারে তার সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Torch procession at DU demanding justice for JCD leader Shammo

The procession, under the banner of "Students Against Terrorism", began around 8:20pm

1h ago