সাভার ট্যানারির কঠিন বর্জ্য যাচ্ছে পশুখাদ্য কারখানায়

অবৈধভাবে বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাক ২টি আটক করা হয়। ছবি: স্টার

সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট থেকে কঠিন বর্জ্য নিয়মিত একটি চক্র অবৈধভাবে বের করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে বের করা এসব কঠিন বর্জ্য নেওয়া হচ্ছে পশু, পোলট্রি ও মাছের খাদ্য তৈরির কারখানায়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের সলিড ওয়েস্ট ডাম্পিং স্টেশনে গেলে পরিবহন শ্রমিকরা এ তথ্য জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিয়মিত একটি চক্র গভীর রাতে ও ভোরবেলা ট্রাক বোঝাই করে কঠিন বর্জ্য সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের পেছনের গেট ও ১ নম্বর গেট দিয়ে বের করে নিয়ে যায়। সেগুলো দেশের বিভিন্ন পশু, পোল্ট্রি ও মাছের কারখানায় বিক্রি করা হয়। এ চক্রের সঙ্গে ট্যানারির কিছু নিরাপত্তাকর্মী, কর্মচারী ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা জড়িত।'

অপর এক শ্রমিক জানান, আজও কঠিন বর্জ্যবোঝাই ২টি ট্রাক অবৈধভাবে বের হওয়ার সময় আটক করেছে ট্যানারি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, ট্রাক ২টি ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন ওই শ্রমিক।

ওই শ্রমিকের অভিযোগের পর ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কোম্পানি লিমিটেডের বাউন্ডারির ভেতরে জব্দ করে রাখা ঢাকা মেট্রো ড ১৪-৬০৪৭ ও ঢাকা মেট্রো ড ১২-১২৭১ নম্বরের ২টি ট্রাক দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ট্রাক ২টি কঠিন বর্জ্য নিয়ে বের হওয়ার সময় জব্দ করা হয়েছে। আমরা মাঝেমধ্যেই এরকম ট্রাক জব্দ করি। পুলিশেও দেই। কিন্তু, পুলিশ ছেড়ে দেয়। এই কঠিন বর্জ্য দিয়ে পোলট্রি-পশুখাদ্য তৈরি করা হয়। বিষয়টি বন্ধ করা দরকার।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান প্রকৌশলী সতেন্দ্রনাথ পাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মাঝেমধ্যেই কঠিন বর্জ্যবোঝাই ট্রাক বের হওয়ার সময় আটক করি। মাঝেমধ্যে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এ ছাড়া পুলিশ ফাঁড়িতেও দেওয়া হয়।'

'আমরা এ চক্রটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চাই। তা ছাড়া এই চক্রটিকে প্রতিহত করা যাবে না। আগামী বোর্ড মিটিংয়ে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব এবং একটা সিদ্ধান্তে আসব', যোগ করেন তিনি।

বিষয়টি জানতে চাইলে চামড়া শিল্প নগরী ট্যানারি ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রাসেল মোল্লা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কাছে শুধু একটি ট্রাক হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু, ট্যানারি কর্তৃপক্ষ ট্রাকটির বিরুদ্ধে মামলা না দেওয়ায় পরবর্তীতে ডাম্পিং স্টেশনে ওই বর্জ্যগুলো আনলোড করে ট্রাকটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'

'আমরাতো ট্রাক আটক করার কেউ না। ট্যানারি কর্তৃপক্ষ ট্রাক আটক করে মামলা দিলে আমরা মামলা নেব', বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

5h ago