ব্যানারে বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর ছবি না থাকায় কলেজের অনুষ্ঠান বর্জন করলেন এমপি

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের ব্যানারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি না থাকায় অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল কুদ্দুস।
ছবি: সংগৃহীত

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের ব্যানারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি না থাকায় অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল কুদ্দুস।

সংসদ সদস্য চলে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা পৌর সদরে অবস্থিত বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজে এই ঘটনা ঘটে।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সজীব ডেইলি স্টারকে জানান, বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের এইচএসসি ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, 'কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. একরামুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শামীম আহমেদ ও নাটোর জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমানের নামও ছিল ব্যানারে। কিন্তু অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছিল না। অনুষ্ঠান শুরুর আগে বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে বারবার বললেও তারা গুরুত্ব দেন নি।'

'পরে আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯টায় কলেজের বিদায় অনুষ্ঠানে এসে সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস গাড়ি থেকে নামার পর মঞ্চের ব্যানারে তাকিয়ে দেখেন ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নেই। সেই মুহূর্তেই এমপি কলেজ ত্যাগ করে ক্ষুব্ধ হয়ে চলে যান,' বলেন তিনি।

এরপরই এ ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সজীব বলেন, 'বিএনপির এজেন্ডা ছাড়া এভাবে ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। সেকারণে আমরা এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছি।'

ব্যানারে ছবি না দেওয়ার দায় অধ্যক্ষের বলে দাবি করেন তিনি।

জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. একরামুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদায় অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। কলেজের ছাত্রলীগের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়।'

'আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমার ২৬ বছর কর্মজীবনে কোনোদিন এমন নজির দেখিনি যে কলেজের শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে জাতির পিতার বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ব্যানার করেছে। রাজশাহী কলেজ, নবাব সিরাজ উদ-দৌলা কলেজের বিদায় অনুষ্ঠানেও কখনও এমন নজির দেখিনি,' বলেন তিনি।

এসব বিষয়ে সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি না থাকলে আমরা কোনো অনুষ্ঠানে যাই না। কলেজে শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের ব্যানারে ছবি না থাকায় ওই অনুষ্ঠান বর্জন করেছি।'

'বঙ্গবন্ধু এই দেশ বানিয়েছেন তার ছবি থাকবে না তো কার ছবি থাকবে? যদি কোনো শিক্ষক বলে থাকেন এরকম নজির নেই তারা জামায়াত-বিএনপির শিক্ষক,' বলেন তিনি।

জানতে চাইলে নাটোরে দিঘাপতিয়া এম.কে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ আব্দুর রাজ্জাক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদায় অনুষ্ঠানে জাতির পিতার এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। তবে জাতীয় অনুষ্ঠান হলে সেখানে ব্যবহার করা হয়। এর বাইরে মুজিববর্ষের সময় একটা লোগো ব্যবহারের নির্দেশনা ছিল। যেহেতু মুজিব বর্ষ শেষ এখন সেটা বাধ্যতামূলক নয়।'

তিনি বলেন, 'সংসদ সদস্য অনুষ্ঠান বর্জন না করে পরামর্শ দিতে পারতেন। ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি, না দিলে করিনা- এটা সঠিক চিন্তা নয়। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে তারা কোনো অসম্মান করেননি।'

Comments

The Daily Star  | English

Mob beating at DU: Six students confess involvement

Six students of Dhaka University, who were arrested in connection with killing of 35-year-old Tofazzal Hossain inside their hall on Wednesday, confessed to their involvement in the crime before a magistrate

9h ago