বাড়ছে বিক্ষোভ, ইরানের সেনাবাহিনীর হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভ চলাকালে পুড়ছে ইরান পুলিশের একটি মোটরসাইকেল। গত ১৯ সেপ্টেম্বরের ছবি। ছবি: রয়টার্স

ইরানে 'অনুপযুক্ত পোশাক' পরার অভিযোগে নীতি পুলিশের হাতে আটক মাহসা আমিনির (২২) মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ইরানজুড়ে চলা বিক্ষোভ আরও বড় আকার ধারণ করেছে। 

এ অবস্থায় আজ শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে ইরানের সেনাবাহিনী বলেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে 'শত্রুদের মোকাবিলা' করা হবে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীদের কাছে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আসা সবচেয়ে কঠিন সতর্কবার্তা এটি।

সেনাবাহিনী বলেছে, 'ইসলামি শাসনকে দুর্বল করার জন্য এই মরিয়া কর্মকাণ্ড শত্রুদের অশুভ কৌশলের অংশ। যারা অন্যায়ভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করার জন্য শত্রুদের বিভিন্ন চক্রান্ত মোকাবিলা করা হবে।' 

গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মাহমুদ আলাভিও আজ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

বিক্ষোভকারীদের 'রাষ্ট্রদ্রোহী' উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, 'ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং বিপ্লবের মহান অর্জনকে পরাজিত করার স্বপ্ন কখনই বাস্তবায়িত হবে না।'

রয়টার্স জানিয়েছে, মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা রাজধানী তেহরান এবং অন্যান্য শহরে বেশকিছু পুলিশ স্টেশন এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে।

ইরানি গণমাধ্যম গতকাল বৃহস্পতিবার এসব ঘটনায় ২৮৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা তথ্যের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মানুষ রাস্তায় নামতে শুরু করার পর থেকে পুলিশি অভিযানে ইরানে অন্তত ৩৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

ইরানের বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে আজ স্পেনের মাদ্রিদে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন কয়েকজন। এ ছাড়া, গতকাল বৃহস্পতিবার কানাডা ও নেদারল্যান্ডেসে বিক্ষোভ করেছে মানুষ।

এদিকে দেশব্যাপী এই বিক্ষোভে অংশগহণকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়ে আজ ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে সরকারের সমর্থনে মিছিল হয়েছে।

ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়েছে, মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের 'ইসরায়েলের সেনা' বলে অভিহিত করেছেন। তাদেরকে 'আমেরিকার মৃত্যু হোক' এবং 'ইসরায়েলের মৃত্যু হোক' বলে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। 

সম্প্রতি, 'সঠিকভাবে' হিজাব না পরার কারণে মাহসা আমিনিকে আটক করে ইরানের নীতি পুলিশ 'গাশত-ই এরশাদ'। এরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত শুক্রবার ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় গত শনিবার থেকে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। মাহসা আমিনিকে পুলিশি হেফাজতে মারধর করার অভিযোগ আনেন বিক্ষোভকারীরা।

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হলেও তা ইরানের অন্তত ৫০ শহরে ছড়িয়ে পড়ে। সবশেষ ২০১৯ সালে গ্যাসের মূল্য বাড়ার পর এমন বড় আকারে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Interim govt must not be allowed to fail: Tarique addresses BNP rally

Thousands join BNP rally from Nayapaltan to Manik Mia Avenue

2h ago