পরিবেশ ছাড়পত্রের আবেদন না করা ট্যানারি বন্ধের সিদ্ধান্ত

সাভার চামড়াশিল্প নগরী থেকে অপরিশোধিত বর্জ্য গিয়ে মিশছে ধলেশ্বরী নদীতে। স্টার ফাইল ছবি

সাভারের চামড়াশিল্প নগরীর যেসব ট্যানারি কখনো পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেনি এবং কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার সম্ভাবনা নেই সেসব ট্যানারি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ জাতীয় সংসদ ভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহ বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সবার সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী মাসে এসব ট্যানারির তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদিত হয়। সেখানে ২৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা নেই। গত বছরের আগস্টে দূষণের জন্য শিল্প নগরী আপাতত বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। এরপরও দূষণ বন্ধে একাধিকবার সুপারিশ করেছিল কমিটি। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে এবার বৈঠকে শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেয় সংসদীয় কমিটি। শিল্পমন্ত্রী এবং বাণিজ্য মন্ত্রীকেও বৈঠকে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বিশেষ আমন্ত্রণে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার আজ বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং বিসিকের চেয়ারম্যান বৈঠকে হাজির হন।

বৈঠক শেষে সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের উদ্দেশ্য ছিল দূষণ রোধ করা। কিন্তু এখন সাভারের ধলেশ্বরী মৃতপ্রায়। চামড়া শিল্প নগরীতে কঠিন বর্জ্য পরিশোধনের কোনো ব্যবস্থা নেই। শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করেছে।

'বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্যানারি কারখানাগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হবে। একটি ভাগে থাকবে যেসব প্রতিষ্ঠান নিজেরা বর্জ্য শোধনাগার তৈরি করেছে, আরেকটি ভাগে থাকবে যেসব প্রতিষ্ঠান কখনোই পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেনি এবং যাদের কমপ্লায়েন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাকী প্রতিষ্ঠানগুলো থাকবে তৃতীয় ভাগে।'

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, দ্বিতীয় ভাগে যেসব প্রতিষ্ঠান থাকবে সেগুলো দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করবে। তাদের সব সুবিধা বাতিল করা হবে। তৃতীয়ভাগে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কমপ্লায়েন্ট হওয়ার জন্য ছয় মাসের সময় দেওয়া হবে। এ ছাড়া বর্জ্য পরিশোধনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছাড়া কিভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, এর জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, তানভীর শাকিল, মো. রেজাউল করিম এবং মো. শাহীন চাকলাদার বৈঠকে অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

5h ago