আমিরাতকে এবার আর লড়াই জমাতে দিল না বাংলাদেশ

মঙ্গলবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩২ রানের ব্যবধানে আমিরাতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে।
ফাইল ছবি

প্রথম ম্যাচে কিছুটা সময় জেতার পরিস্থিতিও তৈরি করে ফেলেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ম্যাচ হারলেও তারা নুরুল হাসানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে দেখ গেল না সেই ঝাঁজ। বাংলাদেশের বড় রানের পর ব্যাটিংয়ে পুরোটা সময় ভুগল আইসিসি সহযোগী সদস্য দেশটি।

মঙ্গলবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩২ রানের ব্যবধানে আমিরাতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। বাংলাদেশের ১৬৯ রানের জবাবে ২৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সিপি রিজওয়ান-বাসিল হামিদের জুটিতে স্রেফ ব্যবধান কমিয়েছে তারা। ২০ ওভার ব্যাট করে করতে পেরেছে ১৩৭ রান।

বাংলাদেশের দাপুটে জয়ে অবদান বেশ কজনের। ওপেন করতে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৭ বলে ৪৬ রান করেন। লিটন দাসের ২০ বলে ২৫, আফিফ হোসেনের ১০ বলে ১৮, মোসাদ্দেকের ২২ বলে ২৭, ইয়াসির আলির ১৩ বলে অপরাজিত ২১, অধিনায়ক নুরুলের ১০ বলে ১৯ বড় পুঁজি আনতে রাখে ভূমিকা।

শুরুতেই দুর্দান্ত বল করে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে দেওয়া তাসকিন প্রথম ৩ ওভারে কেবল ১০ রান নিয়ে পান ১ উইকেট। ইনিংসের শেষ ওভারে দিয়েছেন আরও ১১ রান। মাঝের ওভারে বল করতে এসে গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট নেন মোসাদ্দেক। ইবাদতকে পাওয়া গেছে ভালো শেপে। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট।

রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় আমিরাত। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও তাসকিনের প্রথম দুই ওভারে আসে কেবল ৮ রান। তৃতীয় ওভারে এসে নাসুম আহমেদ প্রথম ৪ বলে দেন স্রেফ এক রান। ডট বলের চাপ থেকে পঞ্চম বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন চিরাগ সুরি।

তাসকিনদের চাপ অব্যাহত থাকায় আমিরাতের ব্যাটাররা করছিলেন হাঁসফাঁস। মোহাম্মদ ওয়াসিম সেটা আলগা করতে নাসুমকে দুই ছক্কা উড়ালেও পরের ওভারে তাকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে আসে কেবল ২৮ রান।

পাওয়ার প্লের পর এই ঘাটতি পুষাতে পড়তে থাকে একের পর এক উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেনের বলে পর পর ফিরে যান আরিয়ান লাকরা ও ভ্রিতিয়া অরভিন্দ। ২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা।

এরপর রিজওয়ান ও হামিদের জুটি কেবল কমিয়ে গেছে ব্যবধান। ৭২ বলে ৯০ রানের জুটিটি ভাঙে ১৯তম ওভারে। ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪২ করা বাসিল ফেরেন ইবাদত হোসেনের বলে। অধিনায়ক রিজওয়ান ৩৫ বলে ফিফটি করার পর অপরাজিত থাকেন ৫১ রানে। বেশ কিছু চোখ জুড়ানো শট খেলেছেন তিনি। তাদের দল স্বাগতিক হলেও গ্যালারিতে উপস্থিত হাজার পাঁচেক দর্শকের প্রায় সবাই ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থক। ম্যাচে উত্তজেনা না থাকা রিজওয়ানের শট আনন্দ জুগিয়েছে সবাইকেই। 

প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো এদিনও টস হেরে আগে ব্যাট করতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনারের জুটি প্রথম ম্যাচের তুলনায় এদিন কিছুটা লম্বা হয়েছে। শুরুর নড়বড়ে অবস্থা অবশ্য আড়াল হয়নি। লম্বা সময় পর ফেরা সাব্বির রহমান তার তৃতীয় সুযোগটি হাতছাড়া করেছেন। ব্যাটের কানায় লেগে বাউন্ডারি পাওয়ার পর ফ্রি হিটে ছক্কা মেরেছিলেন। কিন্তু তাও ৯ বলে ১২ রানের বেশি করতে পারেননি। আউট হয়েছেন বাঁহাতি স্পিন খেলতে না পেরে। 

মিরাজ কিছুটা ডট বল খেললেও কয়েকটি ভালো শটে বাউন্ডারি পেয়ে যান। লিটনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিও জমে যায়। লিটন ফেরার পর মাঝের ওভারে তাকে মন্থর হতে দেখা গেছে। সেটা পুষিয়ে নিতে পারতেন কিনা তার প্রমাণের আগেই ফেরেন আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে।

লিটন তিনে নেমে ভালো শুরুটা টেনে নিতে পারেননি। চোট কাটিয়ে ফেরার পর তার ব্যাটিংয়ে অবশ্য দেখা যায়নি জড়তা। আগের দিন ফিফটি করলেও এদিন ঝড়ের আভাস দিয়েই নিভে যান আফিফ। 

পাঁচে প্রমোশন পেয়ে মোসাদ্দেক শুরুতে ধুঁকলেও পরে মেরেছেন ভালো শট। রিভার্স সুইপ, স্লগ সুইপে দেখিয়েছেন সাবলীলতা। ইয়াসির ও সোহান শেষ দিকে ঝড় তুলতে ধুঁকছিলেন। শেষ ওভারটায় কিছুটা পুষিয়ে দেওয়ায় বড় সমালোচনা থেকেই হয়ত বাঁচলেন তারা। 

আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে বুধবার দেশে ফিরে আসবে বাংলাদেশ দল। কদিন পরই আবার তাদের ধরতে হবে নিউজিল্যান্ডের বিমান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সেখানে আছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। দলের সমন্বয় খুঁজে পেতে নিশ্চিতভাবেই মুখিয়ে থাকবে টিম ম্যানেজমেন্ট। 

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago