খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশ ৯ খাতে

দেশের ৯টি খাতেই মোট খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশ রয়েছে। দীর্ঘ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক ঋণগ্রহীতা ঋণের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করতে পারছেন না। আবার অনেকে ইচ্ছা করেই ঋণ পরিশোধ করছেন না। এতে ওইসব খাতে খেলাপি ঋণ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে।

এই ৯টি খাত হচ্ছে— জাহাজ ভাঙা ও নির্মাণ শিল্প, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প, চামড়া শিল্প, বাণিজ্য, টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, পরিবহন, ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)।

গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বরে মোট খেলাপি ঋণ ১০১ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকার মধ্যে এই ৯ খাতের সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ ৭১ হাজার ৩০ কোটি টাকা।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মন্দা ও চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এই ৯ খাতের ঋণগ্রহীতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ছাড়া, ব্যাংকগুলো সুষ্ঠু করপোরেট সুশাসন প্রক্রিয়া অবলম্বন না করেই অনেক ঋণ দিয়েছে, যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

ডিসেম্বর পর্যন্ত জাহাজ নির্মাণ খাতে দেওয়া ঋণের মধ্যে ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ খেলাপি হয়েছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানান, ২০০৫-২০০৬ সালে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে প্রচুর রপ্তানি অর্ডার আসায় ব্যাংকগুলো এই খাতে প্রচুর অর্থ ঋণ দেয়।

তবে ২০০৭-২০০৮ সালে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বড় আকারের অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে এবং অনেক ক্রেতা অর্ডার বাতিল করতে বাধ্য হন।

ফলে এই খাতের ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

জাহাজ ভাঙা খাতের পরিস্থিতিও বেশি ভালো না। বেশ কয়েক বছর আগে পরিত্যক্ত জাহাজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই খাতের সংশ্লিষ্টরা সংকটে পড়ে। এতে অনেকে লোকসানের মুখে পড়ে।

ডিসেম্বরে এসএমই খাতের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ ছিল।

বাণিজ্য খাতে দেওয়া ২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ খেলাপি হয়েছে।

অনেক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী খেলাপি হয়ে পড়েছেন। এই খাতে দেওয়া ঋণের ৭ দশমিক ৭ শতাংশ এখন খেলাপি, যার পরিমাণ ৭ হাজার ৭৮ কোটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, অনেক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী দৈনন্দিন জীবনের খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছেন।

অন্য অনেক দেশের মতো, বাংলাদেশেও কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। ইতোমধ্যে আমদানি বিলের পরিমাণ বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে, যার ফলে ভোক্তাদের ওপর চাপ পড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা আরও বলেন, 'অর্থনৈতিক চাপের কারণে জীবনযাত্রার মান কমছে। অনেক কার্ডধারী সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না।'

কিছু ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যাংকের কাছ থেকে এনবিএফআইর নেওয়া ৭ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার মধ্যে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ খেলাপি হয়ে গেছে।

এ ছাড়া, বেশি কিছু এনবিএফআই আর্থিক অনিয়মের শিকার হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অসাধু চক্রের সদস্যরা আর তা ফিরিয়ে দেননি। এ কারণে, আমানতকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে এনবিএফআইগুলোর।

এই ৯ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হল ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার সময় ঠিকমত নিয়ম মেনে চলেনি।

ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী পুরো ব্যাংকিং খাতের ১ কোটি ২১ লাখ ৮ হাজার ৮৫০ টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণের অনুপাত ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

(সংক্ষেপিত: পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে 9 sectors hold 70pc bad loans লিংকে ক্লিক করুন।)

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank reduces cash reserve requirement

Three banks agree to merge, two oppose

Among the five Shariah-based banks slated for merger by the central bank, three have agreed to the regulator’s plan, while two have opposed it during separate meetings in the last three days..Those that agreed are First Security Islami Bank PLC (FSIB), Global Islami Bank PLC (GIB), and Uni

40m ago