নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস: বিমানের আরও ৫ জন গ্রেপ্তার

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

তারা হলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ডিজিএম সিকিউরিটির এমটি অপারেটর মো. মাসুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও অফিসের এমএলএসএস মো. জাহিদ হাসান, পরিচালক প্রশাসন অফিসের এমএলএসএস সমাজু ওরফে সোবাহান, ওয়ার্কশপ হেলপার মো. জাবেদ হোসেন এবং ফ্লাইট অপারেশনের এমএলএসএস মো. জাকির হোসেন।

এর আগে, এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর আওলাদ হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, এনামুল হক, মো. হারুন-অর-রশিদ ও মাহফুজুল আলমকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, 'গত ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ১২টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। এর আগের দিনেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে। ফলে নিয়োগ প্রার্থীরা উত্তরাস্থ হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে আনুমানিক ২ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন, যার কারণে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয় এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের হয়, যার দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিবি পুলিশকে।'

ডিবি প্রধান বলেন, 'তদন্তের সূত্র ধরে ওই দিনেই গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৫ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের দেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদপুর, গাজীপুর ও বিমানভবন থেকে আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।'

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, 'এ পর্যন্ত তাদের হেফাজত থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র বিক্রির ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নিয়োগ প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া বিভিন্ন ব্যাংকের ৩২টি চেক, ১৭টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ১৪টি স্মার্টফোন, মালিকানাবিহীন একটি মোটরসাইকেল, টাকার হিসাব রাখা ৩টি ডায়েরি, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হার্ড ও সফটকপি এবং নিয়োগ প্রার্থীদের ৫৪টি প্রবেশপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।'

গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল অ্যানালাইসিস, পুলিশ ও আদালতের কাছে গ্রেপ্তারকৃতদের জবানবন্দি এবং সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা যায়, এ চক্রটি বেশ কয়েক বছর ধরে এ নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশ্নপত্র ফাঁস করার ঘটনায় জড়িত। এ নিয়োগের প্রশ্নপত্র জিএম অ্যাডমিনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ফটোকপি হচ্ছিল ডিরেক্টর অ্যাডমিনের রুমে। গ্রেপ্তারকৃত ৯ জন আদালতে এই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কীভাবে পেয়েছে এবং প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা কীভাবে সংগঠিত করেছে, সে মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে বলে জানান তিনি।

ডিএমপির গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমানের নির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাতের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সামছুল আরেফীন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুল আলম মুজাহিদ এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago