কেন তারা এ দেশের রাজনীতিতে থাকবেন: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ফাইল ছবি

এখন সরকারে আছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর বিরোধী দলের একটা অংশ স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, কেন তারা এ দেশের রাজনীতিতে থাকবেন! এটিই তো আসলে বোধগম্য বিষয় নয়।

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত '৭১ এ গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চাই' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

স্বাধীনতা পরবর্তী পরিস্থিতি স্মরণ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের নব্য পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেই অপশক্তি এখনো ক্রিয়াশীল। এখনো খুবই সক্রিয়। এখনো তাদের আস্ফালন আমরা শুনি, তারা আরেকটি পঁচাত্তর ঘটাতে চায়। অনেকেই আমাদের বলার চেষ্টা করেন, অতীত ঘেঁটে কী লাভ? আমি অতীতকে জানবো-বুঝবো, অতীত থেকে শিখবো এবং সেটা নিয়ে বর্তমানের ওপর দাঁড়িয়ে আমার ভবিষ্যত নির্মাণ করবো। অতীত ভুলে যাওয়ার জন্য না।

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে ক্ষমতায় থেকেছেন দীর্ঘ দিন তারা এখনো বলেন তারা রাজনীতি করেন। রাজনীতি তো দেশ সেবা, মানুষের সেবা। মুখে বলেন রাজনীতি করছি কিন্তু এই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঔদ্ধত্য দেখানো। এই বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘৃণ্য শত্রু, মানবতাবিরোধী অপরাধ যারা ঘটিয়েছে তাদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া, শহীদের রক্তরঞ্জিত পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দেওয়া; কেন তারা এ দেশের রাজনীতিতে থাকবেন! এটিই তো আসলে বোধগম্য বিষয় নয়।

একটি দেশের স্বাধীনতার পরে সেখানে স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষের শক্তি কেন থাকবে! স্বাধীন যখন হয়ে গেছে, যারা সরকারে থাকবে তারা স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হবে, যারা বিরোধী দলে থাকবে তারা স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ হবে। তারা সবাই মিলে স্বাধীন দেশটা গড়বে—সরকার-বিরোধী দল সবাই মিলে, বলেন দীপু মনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদেরই দুর্ভাগ্য যে, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পরে এমন একটি পরিস্থিতিতে আমরা আছি, এতদিন পেরুনোর পরেও এখন সরকারে আছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর বিরোধী দলের একটা অংশ স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। তাদের অনেকে স্বাধীনতাকে এখনো গণ্ডগোল বলেন। তাদের শীর্ষ নেতাদের অনেকের অতীত হচ্ছে, তারা এবং তাদের পূর্বসূরীরা রাজাকার ছিলেন। তারা এখনো নানা রকম ঔদ্ধত্য দেখান।

তার মধ্যেও আমরা সৌভাগ্যবান যে, অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে হলেও আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জায়গায় ফিরে আসতে পেরেছি। সরকারে পরপর তিনটি মেয়াদে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মজার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে চলেছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে। সে জন্য আজকের এই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তি যতেই আস্ফালন করুক না কেন-বাধা দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, তারপরও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। ৪০ বছর পরে হলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। এই বাংলাদেশে আর কেউ তা করতে পারেনি, শেখ হাসিনা পেরেছেন—বলেন দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যাকে একুশ বছরের জঞ্জাল সরাতে হয়েছে, এখনো হচ্ছে। তিনি একদিকে সেই অতীতের জঞ্জাল সরাচ্ছেন, আরেকদিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এই বাংলাদেশকে। আমরা কথা বলার সময় সিঙ্গাপুর বলি, মালয়েশিয়া বলি সব দেশের সাফল্যই নিশ্চয়ই খুব বড় বিষয় সেই দেশ-জাতির জন্য। কিন্তু এই তুলনাগুলো কি সঠিক? বাংলাদেশে একটা যে কোনো কাজ করতে হলে সেটি সিঙ্গাপুরের মতো তার সঙ্গে তুলনা করলে চলে, যেখানে ১৭ কোটি মানুষ! যেখানে এত দারিদ্র্যের মধ্যে ছিল মানুষ এবং একে একে সেই সব সমস্যা কাটিয়ে যখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে...শেখ হাসিনা যখন এক পা এগোন, তাকে কত বড় বোঝা নিয়ে সামনে এগুতে হয়! যখন একইসঙ্গে পেছন দিকে টেনে ধরার অপশক্তি সক্রিয় রয়েছে। কাজেই আমরা এই বিষয়গুলো যেন সব সময় বিবেচনায় রাখি।

Comments

The Daily Star  | English

A transitional budget for troubled times

Govt signals people-centric priorities but faces tough trade-offs

3h ago