বেড়িবাঁধে ধস, কলাপাড়ায় ১০ হাজার একর জমির আমন নষ্টের আশঙ্কা

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার জালালপুর গ্রামে বেড়িবাঁধ ধস। ছবি: স্টার

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার জালালপুর গ্রামে অন্তত ৩০ মিটার বেড়িবাঁধ আন্ধারমানিক নদীতে ধসে গেছে। বাঁধের স্লোপও ভাঙনের হুমকিতে। জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে আমন ধান নষ্টের শঙ্কায় ওই এলাকার ৮ গ্রামের অন্তত ২ হাজার কৃষক।

তাদের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে বেড়িবাঁধটি বালুভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে জরুরিভিত্তিতে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও তা ধসে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, সিত্রাংয়ের প্রভাবে পটুয়াখালীতে অন্তত ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তা মেরামত না হওয়ায় কৃষকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে।

জালালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল হাওলাদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত রোববার দুপুরে হঠাৎ বাঁধের কমপক্ষে ৩০ মিটার নদীতে ধসে যায়। স্লোপসহ ভাঙনের হুমকিতে আশেপাশের এলাকা। জালালপুর, সদরপুর, আক্কেলপুর, সৈয়দপুর, মজিদবাড়িয়া, দরিয়াপুর, হাজীপুর ও লস্করপুর গ্রামের কৃষকরা আমন ধান নষ্টের আশঙ্কায় আছেন।'

কৃষক হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধসে যাওয়া বাঁধ দ্রুত মেরামত না করলে নদীর লবণাক্ত পানিতে প্রায় ১০ হাজার একর জমির আমন ধানের ক্ষতি হতে পারে।'

তিনি জানান, সিত্রাংয়ে প্রভাবে বাঁধের কিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে।

কৃষক মিরাজ হাওলাদার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাঁধটি আগে থেকেই জরাজীর্ণ ছিল। ৪-৫ মাস আগে এর ঝুঁকিপূর্ণ অংশে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। ওই ব্যাগের কিছু অংশও নদীতে ধসে গেছে।'

কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদার বলেন, 'শুধু আমন নয়, বাড়িঘর-রাস্তাঘাটও পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধেরও আশঙ্কা আছে।'

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়েছিলাম। এলাকার মানুষ বাঁধের ভগ্নদশা নিয়ে শঙ্কিত। উপজেলা পরিষদের বৈঠকে বাঁধ মেরামতের কথা বেশ কয়েকবার বলেছি। বাঁধের ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।'

জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জালালপুরে ৩০ মিটার বাঁধ ভাঙার সংবাদ শুনে তাৎক্ষণিক এক তদারকি কর্মকর্তা (এসও) ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। জরুরিভিত্তিতে ভাঙা অংশ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।'

তিনি জানান, গত জুনে ওই এলাকায় ১৪৫ মিটার বেড়িবাঁধ ২৪ লাখ টাকার জিও ব্যাগ দিয়ে রক্ষা করা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ে ৩০ মিটার বাঁধ নদীতে ধসে গেছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সিত্রাংয়ের প্রভাবে পটুয়াখালীতে প্রায় ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেসময় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

জোয়ারের পানির প্রবল চাপে বেড়িবাঁধের ৬ কিলোমিটার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন।

Comments

The Daily Star  | English
Hilsa fish production in Bangladesh

Hilsa: From full nets to lighter hauls

This year, fishermen have been returning with lesser catches and bigger losses.

13h ago